প্রযুক্তির বিকাশে নতুন বিপ্লবের সুযোগ হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেখ হাসিনা বলেছেন, তথ্য প্রযুক্তির বিকাশের ফলে আমাদের সামনে এক নতুন বিপ্লবের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই বিপ্লবের প্রধান রসদ হলো তরুণ-তরুণী- যা আমাদের আছে।

বুধবার ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৭’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কাছে মোবাইল ফোনের সেবা পৌঁছে দিতেই আমরা বেসরকারি খাতে এই ব্যবসা উন্মুক্ত করেছিলাম। এখন দেশে প্রায় ১৩ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহার হচ্ছে। মানুষ এখন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিলসহ ট্যাক্সও দিতে পারে। শিগগিরই দেশে ফোরজি চালু হয়ে যাবে। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় জীবন চলে এসেছে হাতের মুঠোয়। জনগণের সেবা হাতের মুঠোয় নিয়ে আসতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রীর বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ খুব বেশি শিক্ষিত না হলেও তারা মোবাইল ফোন ব্যবহারে পারদর্শী। এত বেশি সময় ধরে মোবাইল ফোনে কথা বলার রেকর্ড বিশ্বের অন্য কোনও দেশে নেই। এখন স্কাইপির মাধ্যমে বিদেশে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলতে পারে মানুষ। হাতে টাকা এলেই এখন কেউ ছেলের সঙ্গে, কেউবা স্বামীর সঙ্গে কথা বলবে ও একে অপরকে দেখবে বলে ডিজিটাল সেন্টারে গিয়ে বসে থাকে।’

ডিজিটাল বাংলাদেশ কথাটি নিজের ছেলে জয়ের দেওয়া বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, ‘২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে দেশকে ডিজিটাল হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। গত আট বছরে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা পৌঁছেছে আট কোটিতে। আমরা দেশকে ডিজিটাল হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়েছি তৃণমূল পর্যায় থেকে। ইউনিয়ন পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির বিস্তার করা হয়েছে। গ্রামীণ মানুষও এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন— ‘বিএনপি তথ্য চুরির ভয়ে সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত হয়নি। কিন্তু আমরা হয়েছি। এখন আমরা ইন্টারনেট ধারও দিচ্ছি। শিগগিরই আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উদ্বোধন করতে যাচ্ছি।’

দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের গুরুত্ব উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বললেন, ‘আমরা এই সেবা সবার কাছে তুলে দিয়েছি। আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের একটু সুযোগ দিলেই তারা ভালো কাজ করে, অনেক কিছু শিখতে পারে। তার প্রমাণ তারা এখন বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে।’

শেখ হাসিনা মনে করেন, দেশে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে নতুন শিল্প বিপ্লব শুরু হয়েছে। তার ভাষ্য, ‘আমাদের তরুণ প্রজন্মকে কাজে লাগাতে হবে। তরুণরাই আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ। শিক্ষা-দীক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টিতে ও মানবসম্পদ গড়তে আমরা কাজ করছি।’
অনুষ্ঠানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট সোফিয়া`র সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চলছে ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৭’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। চার দিনের এ প্রদর্শনীতে প্রধান আকর্ষণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট সোফিয়া।

বেলা আড়াইটা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সোফিয়াকে সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে রাখা হবে। ‘টেক টক উইথ সোফিয়া’ শিরোনামের এক অনুষ্ঠানে ১ হাজার ৭০০ দর্শনার্থী তাকে দেখার সুযোগ পাবেন।

সোমবার মধ্যরাতে তথ্যপ্রযুক্তির এ উৎসবে অংশ নিতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আসে সোফিয়া। গত অক্টোবরে সৌদি আরবের নাগরিকত্ব পাওয়া এই রোবটের সৃষ্টি হংকংয়ের ডেভিড হ্যানসনের মালিকানাধীন হ্যানসন্স রোবটিক্সে। এটি অন্য মানুষের মুখের ভাব বুঝতেও সক্ষম। বাংলাদেশে আসা উপলক্ষে সোফিয়া একটি ভিডিওবার্তাও দিয়েছে।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ৬ ডিসেম্বর ২০১৭