ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের জন্য যে বাজেট নির্ধারণ করা হয়, তার ৬৯ শতাংশ ব্যবহার করতে পেরেছে ব্যাংকগুলো। আগের বছরের তুলনায় প্রশিক্ষণে বাজেট বরাদ্দ প্রায় দ্বিগুণ বাড়লেও এর যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। অন্যদিকে, বছরে একজন কর্মকর্তার প্রশিক্ষণে ব্যাংকগুলোর খরচও সামান্য।
বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বিআইবিএম বলছে, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে ২০১৬ সালে ব্যাংকগুলো বরাদ্দ রেখেছিল ৪১ কোটি ৪১ লাখ ২০ হাজার টাকা; যা আগের বছরের বরাদ্দের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। তবে সমাপ্ত বছরের বরাদ্দের মাত্র ৬৯ শতাংশ ব্যবহার করেছে ব্যাংকগুলো।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্য মতে, ২০১৪ সালে প্রশিক্ষণে ব্যাংকগুলোর বরাদ্দ ছিল ১৭ কোটি ৭৩ লাখ ১০ হাজার। এর মধ্যে এই খাতে ব্যয় হয়েছে ১৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা; যা মোট বরাদ্দের ৯৮ দশমিক ৮১ শতাংশ। ২০১৫ সালে এই খাতে ব্যাংকগুলোর বরাদ্দ ছিল ২৭ কোটি ৫৮ লাখ ৩০ হাজার। এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৪৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা; যা মোট বরাদ্দের ৮৫ দশমিক ০৮ শতাংশ। ২০১৬ সালে বরাদ্দ ছিল ৪১ কোটি ৪১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ব্যয় হয়েছে ২৮ কোটি ৯২ লাখ ৯০ হাজার টাকা; যা মোট বরাদ্দের ৬৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রশিক্ষণে জনপ্রতি ব্যাংক কর্মকর্তার জন্য ব্যাংকগুলোর ব্যয় খুবই কম। ২০১৪ সালে প্রশিক্ষণ বাবদ জনপ্রতি কর্মকর্তার পেছনে ব্যাংকগুলোর ব্যয় মাত্র ২ হাজার ২৮৯ টাকা। যা ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ছিল ৩ হাজার টাকা।
এছাড়া প্রশিক্ষণ ব্যয় ব্যাংকগুলোর পরিচালন ব্যয়ের তুলনায় ১ শতাংশেরও কম। ২০১৬ সালে যা শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় এই হার বাড়লেও তা যথেষ্ট নয়। ২০১৪ সালে এই হার শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে শূন্য দশমিক ৩৩ শতাংশ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, উন্নত দেশে ব্যাংকগুলোতে যেভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় আমাদের দেশে তেমন হয় না। প্রশিক্ষণে আমাদের এখানে বরাদ্দও কম, ব্যয়ও হয় আরও কম। প্রশিক্ষণ বাড়াতে প্রশিক্ষণ ইনিস্টিটিউটের কোনো বিকল্প নেই। এর ফলে সামাজিক উন্নয়নও সম্ভব।
তিনি বলেন, বর্তমানে ব্যাংক খাতে যে সুশাসনের অভাব রয়েছে, প্রশিক্ষণ বাড়িয়ে তা কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব। তবে শুধু প্রশিক্ষণ বাড়ালেই হবে না, পর্যাপ্ত ইনিস্টিটিউট বাড়াতে হবে। প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো বিআইবিএমের উপর নির্ভর করে। তাই প্রতিটি ব্যাংকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকা উচিত।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ১২ জুন ২০১৭