রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক প্রশ্নপত্র প্রণয়নে দোষী সাব্যস্ত হওয়া চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান পদত্যাগ করেছেন। গত ৬ ডিসেম্বর রাবি’র সিন্ডিকেট সভায় মোস্তাফিজুর রহমান ও সহযোগী অধ্যাপক জিল্লুর রহমানকে আগামী ১০ বছরের জন্য রাবির সব ধরনের পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে ডিনের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতেও সুপারিশ করা হয় সভায়।
অবশেষে রোববার ১০ ডিসেম্বর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানের কাছে মোস্তাফিজুর রহমান পদত্যাগপত্র জমা দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন,ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে উপাচার্যের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। উপাচার্য তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের চারুকলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ধর্মীয় উসকানিমূলক দুইটি প্রশ্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই প্রশ্ন দুটির একটি হলো- পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থের নাম কী? এ প্রশ্নের চারটি অপশন ছিল: (ক) পবিত্র কুরআন শরীফ (খ) পবিত্র বাইবেল (গ) পবিত্র ইঞ্জিল (ঘ) গীতা। অন্য প্রশ্নটি হলো- মুসলমান রোহিঙ্গাদের ওপর মায়ানমারের সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা সশস্ত্র হামলা চালায় কত তারিখে?
এ প্রশ্ন দুইটিকে সাম্প্রদায়িক উসকানি উল্লেখ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। পরে ২৮ অক্টোবর উপ-উপার্চায অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহাকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ৬ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭৪তম সিন্ডিকেট সভায় অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান এবং প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জিল্লুর রহমাকে আগামী দশ বছরের জন্য সকল প্রকার পরীক্ষা কার্যক্রমে নিষিদ্ধ করা হয়। একই সঙ্গে আইনগত কোনও বাধা না থাকলে অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানকে ডিনের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আজকের বাজার: এলকে / এলকে ১০ ডিসেম্বর ২০১৭