প্রাথমিক শিক্ষকদের অনশন স্থগিতের সিদ্ধান্ত

৩ দিনের টানা অনশন শেষে তা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। সোমবার ২৫ ডিসেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান তারা।

বেতন স্কেলে বৈষম্য দূর করার দাবিতে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গত শনিবার সকাল থেকে কয়েক হাজার শিক্ষক এ অনশন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন।

সহকারী শিক্ষকদের আটটি সংগঠন এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

মহাজোটের অধীনে থাকা ১০টি সংগঠনের হাজার হাজার শিক্ষকরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে এ অনশনে যোগ দিয়েছেন। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে পাটি, পত্রিকা, পলিথিন বিছিয়ে পৌষের শীতের ২ রাত পার করেছেন ‘মানুষ গড়ার কারিগর’ শিক্ষকরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, অনশনে প্রায় অর্ধশত শিক্ষক অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

অনশনে জোটের নেতারা বলছেন, প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেডে তাদের বেতন দিতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবেন। এখান থেকে বিজয় না নিয়ে তারা ফিরে যাবেন না। এমনকি আগামী ১ জানুয়ারি বিনামূল্যের নতুন বই বিতরণ উৎসবেও তারা যোগ দেবেন না।

পুলিশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষকরা শুধু শনিবার শহীদ মিনারে অবস্থানের জন্য অনুমতি নিয়েছিলেন। গতকাল রোববার শহীদ মিনার ছাড়ার জন্য শিক্ষকদের অনুরোধও জানিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু অনড় শিক্ষকরা তাতে রাজি হননি। তবে আজ (সোমবার) অনশন স্থলে মাইক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শিক্ষকরা।

গতকাল রোববার বিকেলে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী শিক্ষকদের আমরণ অনশনে এসে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। তিনি শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন।

অনশনকারী শিক্ষকদের দাবি, আগের বেতন স্কেলগুলোতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা বেতন পেতেন। কিন্তু ২০১৫ সালের বেতন কাঠামোতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের ব্যবধান তিন ধাপ। এখন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে (মূল বেতন ১০ হাজার ২০০) বেতন পাচ্ছেন। আর প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন ১০তম গ্রেডে (মূল বেতন ১৬ হাজার টাকা)। সহকারী শিক্ষকরা এই বৈষম্য নিরসনে প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিতে ১১তম গ্রেডে (১২ হাজার ৫০০) বেতন চান।

এ ছাড়া উন্নীত ধাপে প্রধান শিক্ষকরা যখন ৫৩ হাজার ৬০ টাকা স্কেলে বেতন পাবেন, তখন সহকারী প্রধান শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকদের প্রায় অর্ধেক ২৭ হাজার ৩০০ টাকা পাবেন বলেও জানান আন্দোলনরত শিক্ষকরা।

আজকের বাজার: এলকে/ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭