ফরহাদ মজহার দম্পতির বিরুদ্ধে মামলার অনুমতি

কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহারের অপহরণ মামলায় ডিবি পুলিশের দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে ফরহাদ মজহার ও তার স্ত্রী ফরিদা আক্তারের বিরুদ্ধে মামলার অনুমতি দিয়েছে আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর বিকেলে ঢাকা মহানগর হাকিম খুরশীদ আলম চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে প্রসিকিউশন মামলা করার জন্য অনুমতি প্রদান করেন। আদালতের অনুমতি অনুযায়ী রাজধানীর আদাবর থানায় মামলাটি দায়ের করবেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

আদাবর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, ফরহাদ মজহারের অপহরণ মামলার ডিবি যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন আদালত তা মঞ্জুর করেছেন। ফরহাদ মজহার ও তার স্ত্রী ফরিদা আক্তারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন মামলা করার আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বলেন, কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহারকে অপহরণ মামলায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তা আমাদের কাছে সঠিক বলে মনে হয়নি। তাই আদালতে নারাজি দেয়ার জন্য সময়ের আবেদন দাখিল করেছি। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। অথচ বিকেলে আদালত নারাজির সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন মামলা করার অনুমতি প্রদান করেন এবং ডিবির দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, সকালে একই আদালতে ডিবির দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর ফরহাদ মজহারের স্ত্রী নারাজির আবেদন করবেন জানিয়ে সময় প্রার্থনা করেন। বিচারক তার আবেদন গ্রহণ করে আগামী ৯ জানুয়ারি এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন। এ সময় ফরহাদ মজহারের স্ত্রী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এসময় ফরহাদ মহজারের স্ত্রী বলেন, ফরহাদ মজহারকে অপহরণ করে চাঁদা দাবি করার অভিযোগে যে মামলা করা হয়েছে তার সঠিক তদন্ত হয়নি। মামলাটি পুনরায় তদন্ত করার প্রয়োজন রয়েছে। তাহলে এর মূল রহস্য উদঘাটন হবে।

এর আগে ৩১ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মাহাবুবুল ইসলাম আদালতে কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহারকে অপহরণ করে চাঁদাদাবি করার অভিযোগে যে মামলা দায়ের করা হয়েছিল সেটিতে অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা প্রমাণিত না হওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

অপরদিকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত ও হয়রানির অভিযোগ দণ্ডবিধির ২১১ ও ১০৯ ধারায় ফরহাদ মজহার ও তার স্ত্রী ফরিদা আক্তারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন মামলা দায়েরের অনুমতি চেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, গত ৩ জুলাই ভোরে শ্যামলীর রিং রোডের ১নং হক গার্ডেনের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন ফরহাদ মজহার। পরে স্ত্রীকে নিজের মোবাইল ফোনে জানান, কে বা কারা তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তাকে মেরেও ফেলা হতে পারে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ছয়বার কল করে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী তাৎক্ষণিক উদ্যোগ নিয়ে মোবাইল ট্র্যাকিং করে তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় এবং ১৯ ঘণ্টা পর যশোরের অভয়নগরে হানিফ পরিবহনের বাস থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

ফরহাদ মজহারের নিখোঁজের ঘটনায় ওই দিন রাতেই স্ত্রী ফরিদা আক্তার বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ০৪। এর আগে তিনি জিডি করেছিলেন। জিডি নং- ১০১।
আজকের বাজার: সালি / ০৭ ডিসেম্বর ২০১৭