ফিলিস্তিনের ৯০ বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইল

যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইল। এর আগে তিন ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। এদের তিনজনই তরুণী। রোববার দীর্ঘ ১৫ মাস রক্তক্ষয়ের পর গাজায় কার্যকর হয় বহুল প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি।

রোববার ইসরাইলি সময় বেলা সোয়া ১১টায় চুক্তি কার্যকরের সঙ্গে সঙ্গে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা স্রোতের মত্যে তাদের বাড়ি ঘরে ফিরতে শুরু করে। যদিও গাজার ৭০ শতাংশ ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অনেকে অজানা গন্তব্যের উদ্দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। ১৫ মাসের রক্তক্ষয়ী সহিংসতায় গাজা জুড়ে শুধু ধ্বংসস্তূপ।

এএফপি এই খবর জানায়।

এএফপি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রথমদিনে তিন ইসরাইলি জিম্মি রোমি গনেন, ডোরন স্টেইন ব্রেচার এবং এমিলি দামারিকে মুক্তি দেয় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধারা। এরপর তাদেরকে রেডক্রসের হাতে তুলে দেয়া হয়। পরে রেডক্রস তাদের পরিবারের হাতে তুলে দিলে পরবারের সদস্যরা তিনজনকে ইসরাইলে নিয়ে যাওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

নির্ধারিত সময়ের প্রায় সময়ের তিনঘন্টা পর যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। বন্দি বিনিময়ে বিলম্ব হওয়ায় ইসরাইল গাজার হামলা চালালে কমপক্ষে ১৯ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়।

চুক্তির অংশ হিসেবে ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয় তেল আবিব। চুক্তির আওতায় একজন ইসরাইলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ৩০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল নেতানিয়াহু প্রশাসনের। ইসরাইল তা-ই করেছে। মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য খান ইউনিস হাসপাতালে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপে হামাসের হাতে থাকা ৩৩ ইসরাইলি জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইল তাদের হাতে আটক শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। চুক্তির প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই বন্দি বিনিময় হবে।

একই সঙ্গে গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করা হবে এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের বাড়িঘরে ফেরার অনুমতি পাবে। পাশাপাশি ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোকে প্রতিদিন গাজায় প্রবেশ করতে দেয়া হবে।

দ্বিতীয় ধাপে হামাসের হাতে থাকা বাকি জিম্মিরা মুক্তি পাবে এবং গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হবে। এর মাধ্যমে ‘টেকসই শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে’।

তৃতীয় ও চূড়ান্ত ধাপে গাজা পুনর্গঠন হবে-যা শেষ করতে কয়েক বছর পর্যন্ত লাগতে পারে। একই সঙ্গে মৃত ইসরাইলি জিম্মিদের মরদেহ ফেরত দেয়া হবে।