যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সারা দেশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এ উপলক্ষে ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরেই শুরু হয়েছে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। গোটা জাতি ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মধ্যরাত থেকে ছুটে যাচ্ছেন শহিদ মিনারে।
ভোর থেকেই শুরু হয়েছে খালি পায়ে প্রভাতফেরি আর মুখে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গান। সেই প্রভাতফেরি গিয়ে মিলছে শহিদ মিনারের পাদদেশে। জাতিসংঘের উদ্যোগে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ভাষাশহীদদের স্মরণে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।
মধ্যরাত থেকে শহিদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘিরে সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছে। গোটা এলাকায় সুদৃশ্য আলপনা আঁকা হয়েছে। সারা দেশেই আয়োজন করা হয়েছে নানা অনুষ্ঠানের।
১৯৫২ সালের এই দিনে ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠীর চোখ-রাঙানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে।
মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শঙ্কিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা (ইউনেসকো) ১৯৯৯ সালে মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও দিবসটি পালিত হচ্ছে।
রাজধানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বিভিন্ন স্থানে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতি একুশের মহান শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।
২১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ছুটির দিন। এদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।
দিবসটি উপলক্ষে সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র এবং বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো একুশের বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে।
এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
আরএম/