ফেরিঘাটে আটকে পড়াদের নিজের অবস্থানে ফিরে যেতে হবে : আইজিপি

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা স্বত্ত্বেও গ্রামের বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে যারা রওনা দিয়ে ফেরিঘাটে আটকে পড়েছেন তাদেরকে নিজেদের অবস্থানে ফিরে যেতে হবে।
ফেরিঘাটে আটকেপড়াদের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা দয়া করে যে যেখানে ছিলেন সেখানে ফিরে আসুন। যারা আটকে আছেন তাদের ঢাকায় ফেরার জন্য পুলিশ প্রয়োজনে সহায়তা সহ সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
বেনজীর আহমেদ আজ দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। আসন্ন ঈদুল ফিতর ও করোনা মহামারি নিয়ে আইন-শৃংখলা বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সরকারি নির্দেশনা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান জানিয়ে আইজিপি বলেন, আমাদেরকে মনে রাখতে হবে বেঁচে থাকলে আরও অনেকবার পরিবারের সঙ্গে ঈদ করা যাবে। কিন্তু মারা গেলে কিংবা করোনা আক্রান্ত হলে এখানেই শেষ। তাই আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি।
পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, দয়া করে কেউ ঝুঁকি নেবেন না। যে যেখানে আছেন সেখানেই অবস্থান করুন। যে পরিবারের কাছে যাচ্ছেন ঈদ করার জন্য, সেখানে করোনা সংক্রমণ ছাড়ানোর শঙ্কা তৈরি করবেন না।
আইজিপি বলেন, “এই মুহূর্তে ফেরিঘাটে সতর্কতা সংকেত চলছে। এর মধ্যে অনেকে ফেরিঘাটে ভিড় করছেন। নানা চোরাইপথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীপার হওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা নৌপুলিশকে বলেছি, এগুলো প্রতিহত করতে।”
আসন্ন ঈদ উপলক্ষে শপিংমল খোলা হয়েছে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘আমরা মার্কেট সমিতির সঙ্গে কথা বলেছি, এসব বিষয়ে সরকার নির্দেশ জারি করেছেন। শপিংয়ের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি বা সুরক্ষা বিধিগুলো অবশ্যই আমাদের মেনে চলতে হবে।এক্ষেত্রে মার্কেট সমিতি, সেলসপার্সন, ক্রেতা সবাই বিষয়গুলো মানবেন।’
করোনায় মৃত্যু কোন স্বাভাবিক ঘটনা নয়, এটা রিয়েল ফ্যাক্ট দাবি করে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘আমরা সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি। তাহলে বৈশ্বিক এ দুর্যোগ থেকে জাতি ও দেশের জনগণকে রক্ষা করতে পারবো।’
ড. বেনজীর আহমেদ আরও বলেন,“এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত ২৩টি জেলা করোনামুক্ত ছিল। কিন্তু যখনই লোকজন চলাচল বাড়িয়ে দিল, তখনই দেশজুড়ে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। যেখানে যেখানে চেকপোস্ট, থেমে যান। ফিরে আসুন। দয়া করে আপনি যেখানে আছেন, সেখানেই থাকেন।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, কিছু লোকের তৎপরতায় সোস্যাল মিডিয়া দুষিত হয়ে গেছে। স্বাধীন সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে নয়, বরং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজবের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গণমাধ্যম একসঙ্গে লড়ছে।
ব্যক্তিগত গোষ্ঠীগত স্বার্থ হাসিলের জন্য যারা গুজবের মতো অপরাধমূলক কাজ করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন আইজিপি।
ঈদের দিন আনন্দ-ফুর্তি করার জন্য বাড়ি থেকে বের না হতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখন দেশের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দুর্যোগ মোকাবেলা করা। সেজন্যেই জনগণের সহযোগিতা দরকার। ঈদের নামাজ খোলা জায়গায় নয়, মসজিদে পড়ুন। যতটা সম্ভব কম সময় থাকুন। বাসা থেকে সুরক্ষার সব প্রস্তুতিনিয়ে যাবেন।