২০১২ সালের পর ফের অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়েছে গ্রিস। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিসংখ্যান অফিস ইউরোস্ট্যাট বলছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরও ০.১ শতাংশ কমেছে। ২০১৬ সালের শেষ প্রান্তিকে যা ১.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল। তথ্যগুলো তুলে ধরেছে বিবিসি ও রয়টার্স।
গ্রিসের বেশ কয়েকটি শ্রমিক ইউনিয়ন বলছে, ঋণের অর্থ পরিশোধের জন্য সরকার দেশটিতে কর বৃদ্ধি ও পেনশন কমানোর মতো ব্যয় সংকোচনের নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। এই প্রবণতা দিন দিন আরও কঠোর হচ্ছে। এ পদক্ষেপের বিপরীতে সেখানে ২ দিনের ধর্মঘট পালন করছে তারা।
বিবিসি ও রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ব্যয় সংকোচনের নীতি সংস্কারের দাবিতে আজ গ্রিসে ২৪ ঘণ্টা হরতাল চলছে। এতে দেশটির নদীপথ, সড়ক পথ ও ট্রেন সেবা বিকল হয়ে পড়েছে। সরকারি কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরাও তাদের কাজ বন্ধ করে রাস্তায় নেমেছে।
ইউরোজোনভুক্ত দেশগুলো অর্থনৈতিক ধস থেকে উঠে দাঁড়াতে গ্রিসকে নতুন বেইল আউট চুক্তির আওতায় ৮৬ বিলিয়ন ইউরো (সাত লাখ ৩৮ হাজার ৬২৬ কোটি) ঋণ সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই অর্থের সর্বশেষ কিস্তি ছাড়া নিয়ে আগামী ২২ মে বৈঠকে বসছে ইসিবি, আইএফ ও ইউরোজনের অর্থমন্ত্রীরা।
কোনো দেশ বা প্রতিষ্ঠান চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়লে বা নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করলে জরুরিভিত্তিতে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার একটি প্রত্যয় হচ্ছে বেল আউট। সরকার আশা করছে, আগামী ২২ মে ইউরোজোনের অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে ঋণের অনুমোদন পাবে গ্রিস।
ব্যবসায়িক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইএইচএস মার্কিটের হাওয়ার্ড আর্চার বলেন, বেল আউট নিয়ে এ অনিশ্চয়তার কারণে মন্দায় ফিরেছে গ্রিস। তিনি বলেন, এ মাসের প্রথম দিকে বিদেশি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ও গ্রিসের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে তার সংশোধন হওয়া দরকার।
এথেন্সের এই মূহূর্তে ৭.৫ বিলিয়ন ইউরো পরিশোধের জন্য নতুন ফান্ড দরকার। যা পরিশোধের শেষ সময় জুলাইতে।
ইউরোস্ট্যাটের তথ্য মতে, প্রথম প্রান্তিকে ইউরোজোনের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে ১.৭০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ইউরোজোনের অন্যান্য দেশের অর্থনীতি উর্ধ্বমুখী হলেও গ্রিসের অবস্থান শুধু উল্টোপথে।
এদিকে, রয়টার্সের বরাতে একটি অনলাইন জানিয়েছে, অর্থনীতিকে টেনে তুলতে গ্রিস সরকার প্রথম সভেরিন বন্ড বা সার্বভৌমত্ব বন্ড ছাড়ার পরিকল্পনা নিচ্ছে। আগামী জুলাইতে এটি বাজারে ছাড়া হতে পারে।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে/১৭ মে ২০১৭