জেলায় যমুনার বুকে এখন পুরাতন চরের সাথে নতুন নতুন চর জেগেছে। সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনটের চরের যতদূর চোখ যায় শুধু পেঁয়াজের সবুজ ক্ষেত।এ চরাঞ্চলের কৃষকরা তাহেরপুরী, ফরিদপুরী ও বারি-১ জাতের পেঁয়াজের চাষ করেছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার বগুড়ায় পেঁয়াজের ভাল ফলনের আশা করছেন বগুড়ার কৃষক ও কৃষিবিদরা। আবহাওয়া অনুকূল ও রোগবালাই নেই পেঁয়াজের ক্ষেতে। প্রকৃতিক দুর্যোেেগর ভয়ে কিছুটা আতংকে আছে কৃষক। সব কিছু মিলিয়ে পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে এবার পেঁয়াজের ভালো ফলন আশা করছে কৃষক।
জেলা কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান এবার বগুড়ার তিনটি উপজেলার মোট ৩ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে জেলার তিনটি উপজেরার চরাঞ্চলে পোঁয়াজ চাষ হয়েছে ২৪২০ হেক্টর জমিতে। জেলার সোনাতলা উপজেলার চালাকান্দির চরের পেঁয়াজ চাষী নজরূল ইসলাম জানান গত বছর শিলা বৃষ্টিতে পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেসময় তারা তারা ৪০ টাকা কেজি দরে ব্যাপারীদের কাছে পেঁয়াজ বিক্রি করার কিছুদিন পর বাজারে সেই পেঁয়াজ ১শ’ থেকে ২শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এবার এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূল আছে। এ অবস্থা বিরাজ থাকলে প্রতি বিঘাতে তারা ৪০ মণের বেশি পেঁয়াজের ফলন আশা করছেন। তিনি আরো জানান, এবার প্রতি বিঘাতে ১৯ হাজার টাকা এবং কেজিতে ১৪ টাকা উৎপাদন খরচ হয়েছে। এবার যদি তারা ৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারেন তবে তাতেই তারা খুশি।
সারিয়াকান্দি উপজেলার চর ঘাগুয়ার কুদ্দুস শেখ জানান, গত বছরের তুলনায় এবার বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ হেেছ। মাঠে এখন তাহেরপুরিও বারি -১ পেঁয়াজ আছে। চরের ৬ ইঞ্চি বালুর নিচে বিশাল পলির আস্তরন। চরের উপর থেকে ৬ ইঞ্চি পলির আস্তর সরিয়ে পেঁয়াজ চাষের উপযোগী করা সম্ভব হচ্ছে। চাষী কুদ্দুস জানান, গত বছর শিলা বৃষ্টিতে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পেঁয়াজের সংকট সৃষ্টি হয়েছিল। তিনি বলেন অন্য উপজেলার মতো তাদের অপেক্ষাকৃত কম উৎপাদন খরচ হচ্ছে। তিনি ১০ বিঘাতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। বিঘাতে তাদের উৎপাদন খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। এবার বিঘাতে ৪৫ মণের বেশি পেঁয়াজ পাওয়ার আশা করছেন কৃষকরা। বিঘাতে উৎপাদন খরচ হয়েছে ১৯ হাজার টাকা। প্রতি কেজিতে উৎপাদন খরচ হযেছে ১৩ টাকা। বাজারে তাহের পুরি পেঁয়াজ এখন পাইকারিতে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ দাম আরো নেমে আসবে বলে জানান তারা।
এ সময়টাতে চরে চিনা বাদাম , ভুূট্টা, খেশারী লাগিয়ে থকে কৃষকরা। তবে ভালো দামের আশায় এবার অনেকে চাষীরা পেয়াজ চাষে ঝুঁকেছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরেরর উপ-পরিচালক আরো জানান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩২ হাজার ৬১৯ মেট্রিকটন। গত বছর ৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছিল। এবার ৩৬৫ হেক্টর বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। তিনি বলেন, এবার এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে আছে, রোগবালই নেই। ফলে প্রতিবিঘা জমিতে ৪০ মণেরও বেশি পেঁয়াজের ফলন কৃষক পাবে এমনটাই আশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কৃষকদের প্রতি কেজিতে পেঁয়াজ উৎপাদনে খরচ হয়েছে ১২ টাকা থেকে ১৩ টাকা। কৃষকরা ৩০ টাকা দরে পেঁয়াজবিক্রি করতে পারলে খুশি হবে। এবং ভোক্তারা ৪০ ধেকে ৪৫ টাকার মধ্যে কিনতে পারলে সন্তোষ প্রকাশ করবেন বলে মনে করেন এ কৃষি কর্মকর্তা। তথ্য-বাসস
আজকের বাজার/আখনূর রহমান