পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় অর্থ ও প্রযুক্তি সরবরাহের জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সফররত জাতিসংঘের উপ-মহাসচিব আমিনা জে মোহাম্মদের সভাপতিত্বে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সেমিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি আশঙ্কা করছি, অর্থায়নে বড় ধরনের সহায়তা না দিলে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না-ও হতে পারে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের এসডিজি শীর্ষ সম্মেলনের আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৩’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে জাতিসংঘের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের আট বছর পরও এসডিজি অর্জনে অর্থায়ন প্রক্রিয়া খুব দ্রুত এগোচ্ছে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমরা খুব ভালো করেছি, আমরা এসডিজিকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে নিয়েছি এবং আমরা এটিকে আমাদের পুরো সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করেছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার এসডিজি অর্থায়নের ৮৫ শতাংশ অভ্যন্তরীণ ভাবে এবং বাকি ১৫ শতাংশ আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মোমেন বলেন, ২০৩০ সালের নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে এসডিজি অর্জনের জন্য আর্থিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির এটাই উপযুক্ত সময়।
আমিনা বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য শীর্ষ সম্মেলনে এসডিজি’র জন্য তাদের গুচ্ছ পরিকল্পনা তুলে ধরতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠান স্বাগত বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আখতার হোসেন এসডিজি বিষয়ে একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন। প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরী, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির এবং ইউনিলিভার বাংলাদেশের পরিচালক শামীমা আক্তার।
পররাষ্ট্র সচিব তার বক্তব্যে বলেন, বাহ্যিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এসডিজি অর্জনে তার অঙ্গীকারে অবিচল রয়েছে এবং এর সকল মূল জাতীয় উন্নয়ন কৌশল এজেন্ডার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
তিনি আরো বলেন, এ রক্ষ্যে আমরা জাতীয় সংসদ, শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজ, বেসরকারি খাত, শ্রমিক সংগঠন এবং গণমাধ্যমের অংশীদারদের সঙ্গে নিয়মিত এবং বিস্তৃত আলোচনার মাধ্যমে একটি ‘সামগ্রিক-সমাজ’ পন্থা গ্রহণ করেছি।
মাসুদ এসডিজি অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা ও প্রযুক্তি ছাড় করার পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমতকে একত্রিত করার জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান।
এর আগে ড. মোমেন একাডেমিতে জাতিসংঘের উপ-মহাসচিবের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
সেমিনারের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আমিনার সঙ্গে বৈঠকে তিনি জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে রাজনৈতিক বিষয়ের পরিবর্তে উন্নয়ন ইস্যুতে মনোনিবেশ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
বড় আর্থিক সহায়তা ছাড়া এসডিজি অর্জিত হবে না : মোমেন
![](https://www.ajkerbazzar.com/wp-content/uploads/2023/07/image-96582-1688228767.webp)