বন্দুকযুদ্ধ: ঢাকাসহ পাঁচ জেলায় নিহত ৭

ছবি : ইন্টারনেট

সারাদেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে রাজধানীর তেজগাঁওসহ ৫ জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৪ মে) দিবাগত রাত থেকে শুরু হয়ে শুক্রবার  (২৫ মে) ভোর পর্যন্ত কুমিল্লায় এক, তেজগাঁয়ের শিল্পাঞ্চল এলাকায় এক, ঝিনাইদহে এক, কক্সবাজারে এক, নেত্রকোনায় দুই ও শেরপুরে একজন নিহত হয়েছেন।

পুলিশের দাবি, নিহতরা সবাই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল।

প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

তেজগাঁও: রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় এলিটফোর্স র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কামরুল নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৪ মে) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে র‌্যাব-২ এর একটি দল মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে ওই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হন। আহত হয়েছেন দুই র‌্যাব সদস্য।

র‌্যাবের দপ্তর থেকে পাঠানো ক্ষুদেবার্তায় জানানো হয়, র‌্যাব-২ এর একটি দল ও মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়। এতে তেজগাঁও রেললাইন বস্তি এবং মহাখালী সাততলা বস্তি এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী কামরুল নিহত হন।

বার্তায় দাবি করা হয়েছে, নিহত কামরুল ১৫টির অধিক মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামি। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

কুমিল্লা: কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কামাল ওরফে ফেন্সি কামাল নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এসময় গ্রেপ্তার হয়েছে আরও দুই মাদক ব্যবসায়ী। আহত হয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশের ৩ সদস্য। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি ও ৫০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত কামালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১২ টি মাদক মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোজ কুমার দে জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশের একটি দল বুড়িচং উপজেলার মহিষমাড়া এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদকব্যসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। পুলিশও পাল্টা গুলি করলে মাদক ব্যবসায়ী কামাল গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান। এসময় গ্রেপ্তার হন কামালের দুই সহযোগী হানিফ ও ইলিয়াছ।

নিহত কামাল আদর্শ সদর উপজেলার রাজমঙ্গলপুর গ্রামের হিরন মিয়ার ছেলে।

আহত গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা হলেন এসআই নন্দন চন্দ্র সরকার, এসআই সাহাবুল ইসলাম ও কনস্টেবল মো. সুমন মিয়া।

ঝিনাইদহ: জেলার কালীগঞ্জ পৌর এলাকার আড়পাড়া নামক স্থানে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শামীম সরদার (৪৫) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১টি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি, ৫০০ পিস ইয়াবা ও ১৭ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শামীমের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় ৯টি মাদক মামলা রয়েছে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, রাতে মাদক উদ্ধারে উপজেলার পৌর এলাকার আড়পাড়া নামক স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ শুরু হয়। পরে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শামীম সরদারকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কক্সবাজার: কক্সবাজারের মহেশখালীর পাহাড়ি এলাকা বড় মহেশখালীর মুন্সির ডেইল পাহাড়তলী গ্রামে ‘বন্দুকযুদ্ধে’মোস্তাক আহমদ (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ত্রিমুখী গোলাগুলি হওয়ায় কার গুলিতে মোস্তাক মারা গেছেন তা নিশ্চিত না হলেও পুলিশের দাবি দু’গ্রুপের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ই মোস্তাক নিহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে এক হাজার পিস ইয়াবা, ৭ রাউন্ড কার্তুজসহ ৪টি থ্রি কোয়ার্টার বন্দুক জব্দ করেছে। মোস্তাকের বিরুদ্ধে দুটি অস্ত্র মামলা, একটি পুলিশ অ্যাসল্ট ও আরেকটি মাদক মামলা রয়েছে।

মহেশখালী থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, রাত ১০টার দিকে বড় মহেশখালীর মুন্সির ডেইল পাহাড়তলী এলাকায় গোলাগুলির সংবাদ পেয়ে থানার এএসআই সঞ্জীব দত্ত, জুয়েলসহ বেশ কজন অফিসার ও সঙ্গীয় ফোর্স অভিযানে যায়। এসময় দুর্বৃত্তরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে।

নেত্রকোনা: জেলার সদর উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের মনাং এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অজ্ঞাত পরিচয়ের দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে ওই ইউনিয়নের মনাং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে ৭০৫ গ্রাম হেরোইন, ৩ হাজার ৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ২টি পাইপগান উদ্ধার করে পুলিশ।

মডেল থানার ওসি মো. বোরহান উদ্দিন খান জানান, মাদক কেনাবেচা হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে ওই এলাকায় পুলিশের একটি টিম অভিযানে যায়। উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছুড়লে পুলিশের দুই কর্মকর্তা ও এক পুলিশ সদস্য আহত হন। এ সময় দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হন।

শেরপুর: জেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালু ডাকাত পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’নিহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

রাসেল/