বন্দুকযুদ্ধ: সাত জেলায় নিহত ৯

ছবি : ইন্টারনেট

যশোর, টাঙ্গাইল, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, নরসিংদী ও গাজীপুরে পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৭ জন নিহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, নিহতরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী। তারা জানায়, বন্দুকযুদ্ধের সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।

জানা যায়, রোববার রাত সাড়ে ৩টার দিকে যশোরে পৃথক দুটি স্থানে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় ৩ জন। শহরের শেখহাটি ও খোলাডাঙ্গায় এ ‘বন্দুকযুদ্ধে’র ঘটনা ঘটে।

নিহতদের পরিচয় জানা না গেলেও পুলিশ বলছে তারা মাদকব্যবসায়ী। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও মাদকদ্রব্য পাওয়া গেছে।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি একেএম আজমল হুদা জানান, রাত সাড়ে ৩টার দিকে যশোর শহরতলীর শেখহাটি ও খোলাডাঙ্গায় মাদক ব্যবসায়ীরা নিজেদের মধ্যে গোলাগুলি করছে- এমন সংবাদ পায় পুলিশ। খবর পেয়ে পুলিশ ওই স্থান দুটিতে যায়। এসময় শেখহাটির নওয়াব আলীর খেজুর বাগান নামক স্থান থেকে দুইটি মৃতদেহ ও ৪শ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। একইসঙ্গে খোলাডাঙ্গা মাঠের মধ্যে থেকে এক মরদেহ ও একশ’ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে র‌্যাবের সঙ্গে রাত সাড়ে ১২টায় বন্ধুক যুদ্ধ হয় একদল মাদক পাচারকারীর। এতে আবুল কালাম আজাদ নামের এক মাদক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এখান থেকেও বিপুল পরিমাণ মাদক, বিদেশি অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে র‌্যাব-১২।

রাজশাহীতে র‌্যাবের সঙ্গে ‌‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৮ মামলারআসামী শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী নিহত হয়েছেন । রোববার রাত ১২টার দিকে নগরীর উপকণ্ঠ বেলপুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, এক রাউন্ড তাজা গুলি এবং এক রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী মো. সব্দুল ইসলাম। রোববার দিবাগত রাত পৌনে ২টার সময় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ একটি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরেও পুলিশের সঙ্গে ‌‌‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ১১টি মাদক মামলার আসামী জনাব আলী (৩২)। সে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। ঘটনাস্থল থেকে একটি শটগান, দুটি কার্তুজ, ৩টি রামদা এবং এক বস্তা ফেনসিডিল উদ্ধারের দাবি করেছে পুলিশ। বন্দুকযুদ্ধের সময় জীবননগর থানার ৩ পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।

নরসিংদীর ঘোড়াশালে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ইমান আলী নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

পলাশ থানার ওসি মো. সাইদুর রহমান জানান, নিহত ইমান আলী ওই এলাকার একজন চিহ্নিত মাদক চোরাকারবারি এবং হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ‘কয়েকটি’ মামলার আসামি।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “ভোররাতে ঘোড়াশাল সেতু টোলপ্লাজার পাশে খালিশারটেক এলাকায় র‌্যাব-১১ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মাদকসম্রাট ইমান আলী গুলিবিদ্ধ হয়।”

পরে সকালে ইমানকে পলাশ থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে বলে জানান ওসি।

ঘটনাস্থল থেকে র‌্যাব বেশ কিছু দামক ও অস্ত্র উদ্ধার করেছে জানালেও এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেনি।

র‌্যাব-১১ এর কোম্পানি কমান্ডার মো. জসিম বলেছেন, তারা পরে ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেবেন।

গাজীপুরের টঙ্গীতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে  রেজাউল ইসলাম রনি ওরফে বেস্তি রনি (২৭) নিহত হয়েছেন, যার বিরুদ্ধে থানায় মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৪টি মামলা রয়েছে।

নিহত রেজাউল ইসলাম রনি ওরফে বেস্তি রনি (২৭) টঙ্গীর এরশাদ নগরের ৩ নম্বর ব্লকের হাফিজুল ইসলামের ছেলে।

রোববার রাত সোয়া ৩টার দিকে টঙ্গীর নিমতলী মাঠ এলাকায় গোলাগুলিতে নিহত হন রনি।

তিনি বলেন, মাদক কেনা-বেচার খবর পেয়ে পুলিশ রাতে ওই এলাকায় অভিযানে যায়।

“পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পরে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে রনি গুলিবিদ্ধ হয়। অন্যরা পালিয়ে যায়। এ সময় তাদের ধরতে গিয়ে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন।”

ঘটনাস্থল থেকে রনিকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি।

অভিযানে আহত টঙ্গী থানার এএসআই মো. ওমর ফারুক ও এএসআই মো. আনোয়ার হোসেনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।

এর আগে গত শনিবার দিবাগত রাতেও পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দেশের ছয় জেলায় ৬ জন নিহত হন।

রাসেল/