বন্ধ হচ্ছে ‘ট্রাম্প ফাউন্ডেশন’

ফের আদালতে মুখ পুড়ল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ঝাঁপ বন্ধ হচ্ছে ‘ট্রাম্প ফাউন্ডেশন’-এর। পারিবারিক দাতব্য সংস্থার অর্থ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কেন নিজের ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক প্রয়োজনে ব্যবহার করবেন, প্রশ্ন তুলেছিলেন নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল বারবারা আন্ডারউড। গোড়ায় নিজেদের মতো করে যুক্তি সাজানোর চেষ্টা করেও অবশেষে পিছু হটল ফাউন্ডেশন। আদালতের নির্দেশ মতোই সংস্থাটি বন্ধ করতে রাজি হয়েছেন কর্তৃপক্ষ। যদিও সংস্থার আইনজীবী পরে সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, ডেমোক্র্যাট বারবারা অযথা বিষয়টিতে রাজনীতির রং দেওয়া চেষ্টা করছেন।

তাঁর বিরুদ্ধে ‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগ তোলার জন্য ট্রাম্প বহু বার নিশানা করেছেন সংবাদমাধ্যম-সহ বিভিন্ন শিবিরকে। কিন্তু প্রেসিডেন্টের ব্যবসা, ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক জীবন নিয়ে দেশেরই বিভিন্ন আদালতে যে অন্তত ১৭টি মামলা চলছে, গত কালই তা জানা গিয়েছিল। ২০১৬-য় অনৈতিক ভাবে নির্বাচনী ভাঁড়ার ভরানোর অভিযোগ উঠেছে ট্রাম্পের বাণিজ্যিক সংস্থা ‘ট্রাম্প অর্গানাইজেশন’-এর বিরুদ্ধে। আর নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেলের কথায়, ‘‘নামেই দান-খয়রাতি। ‘ট্রাম্প ফাউন্ডেশন’ আদতে প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক স্বার্থপূরণে একটা চেকবুকের কাজ করেছে মাত্র।’’

২০১৬-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের হয়ে প্রচারে যে ভাবে এই সংস্থার অর্থ কাজে লাগানো হয়েছিল, তা ‘চমকে দেওয়ার মতো’ বলেও মন্তব্য করেছেন বারবারা। শুধু ট্রাম্প নন, প্রেসিডেন্টের তিন প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান— ডোনাল্ড জুনিয়র, ইভাঙ্কা ও এরিকের বিরুদ্ধেও মামলা চলবে বলে জানান তিনি। ‘ট্রাম্প ফাউন্ডেশন’-এর তহবিলে এখনও যে অর্থ আছে, তার ব্যয় বারবারার তত্ত্বাবধানেই হবে বলে আদালত সূত্রের খবর।

নিজের বহুল বিক্রিত বই ‘ট্রাম্প: দ্য আর্ট অব দ্য ডিল’-এর অর্থ দিয়েই ১৯৮৮ সালে এই ‘অলাভজনক’ সংস্থাটি খোলেন ট্রাম্প। নিজের নামে। তবে ২০০৮ থেকে এখানে এক ডলারও বরাদ্দ করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভাঁড়ার ভরত বাইরে থেকে আসা অনুদানেই। সংস্থার অনুদান দেওয়া-নেওয়ায় একমাত্র স্বাক্ষরকারীও ছিলেন ট্রাম্প নিজেই। কিন্তু কোথাও যে একটা গোলমাল চলছে, ২০১৬-য় তা প্রথম নজরে আনেন এক মার্কিন সাংবাদিক। ব্যাপারটা আদালতে গড়াতেই ‘ট্রাম্প ফাউন্ডেশন’ বন্ধ করার কথা ঘোষণা করেন ট্রাম্প। ২০১৬-রই ডিসেম্বরে। কিন্তু বিষয়টি তদন্তাধীন বলে উল্লেখ করে এই বারবারাই তা হতে দেননি।

এ দিন ট্রাম্পের সংস্থার পিছু হটার ঘোষণায় তিনি বলেন, ‘‘আইনের শাসনের ক্ষেত্রে এই জয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আবার প্রমাণ হয়ে গেল, আইন সবার জন্যই সমান।’’