বন্যায় দিনাজপুরে সড়কে ক্ষতি আড়াইশ কোটি টাকা

বন্যায় দিনাজপুরে ৫৭২ কিলোমিটার সড়ক বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া শহর রক্ষাবাঁধ, গুরুত্বপূর্ণ সেতু, কালভার্ট ও অবকাঠামো ভেঙে যাওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা।
দিনাজপুর সড়ক বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুল হালিম (সড়ক সার্কেল দিনাজপুর) খোলা কাগজকে জানান, জেলায় ১১৯ দশমিক ৯ কিলোমিটার সড়কসহ ১৩টি সেতু ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কার ও মেরামত করতে ১১৫ কোটি টাকার প্রয়োজন।

দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম জানান, ভয়াবহ বন্যায় সড়ক, ব্রিজ, কালভার্ট, ড্রেন, রাস্তাঘাট ঘাগড়া ক্যানেলসহ বিভিন্ন অবকাঠামো মিলে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঘাগড়া ও গির্জা ক্যানেলে অবৈধ স্থাপনা ও দখলের কারণে ক্ষতির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে। এ দুটি ক্যানেল দখলমুক্ত করা না গেলে অল্প বৃষ্টিতেই পৌরবাসী বার বার দুর্ভোগ ও ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। ফলে সরকারকে গচ্চা দিতে হবে কোটি কোটি টাকা।

মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম আরো জানান, ভেঙে যাওয়া রাস্তার কার্পেটিং, সিসি ও আরসিসি রাস্তা, এইচবিবি রাস্তার প্রায় দশমিক ৯৮ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন ২২ কিলোমিটারসহ ব্রিজ, কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘাগড়া ও গির্জা ক্যানেল দখলমুক্ত করতে প্রায় ৩৫ কোটি টাকার প্রয়োজন।

দিনাজপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খলিলুর রহমান জানান, এ জেলায় ২০৪ কিলোমিটার সড়ক, ৮০টি ব্রিজ ও ৪০০ স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৯২ কোটি টাকা।

দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়জুর রহমান জানান, বন্যায় ২০৮ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩১টি স্থানে ব্রিজের ২ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার ক্ষতি হয়েছে। যা সংস্কার করতে প্রায় ২২ কোটি ৭০ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রয়োজন। নদীতীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ১৯ দশমিক ১৮ কিলোমিটার ভেঙে ১৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়াও আউট নেট ১৫টি রেগুলেটর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এসব পুনর্বাসন করতে ৩৯ কোটি ৫৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দের চাহিদা জানানো হয়েছে।

নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুর রহমান আরো জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন। ১৯৯২ সালে দিনাজপুর শহর রক্ষাবাঁধ নির্মাণের পর আর মেরামত বা সংস্কার করা হয়নি। ফলে বাঁধটি সম্পূর্ণ হুমকির মুখে রয়েছে। দ্রুত এ বাঁধ সংস্কার করা প্রয়োজন।