বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, বায়োগ্যাস ও জৈব সার তৈরির উদ্যোগ ডিএসসিসি’র

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) ২০৩০ সালের মধ্যে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালুর অংশ হিসাবে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, বায়োগ্যাস ও জৈব সার তৈরির পরিকল্পনা করেছে।

সংস্থার প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মো. বদরুল আমিন বাসসকে বলেন ‘আমরা বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, বায়োগ্যাস ও জৈব সার উৎপাদনের উদ্যোগ নেব। ডিএসসিসির মহাপরিকল্পনা (২০১৩-৩১) অনুমোদন হওয়ার পর এ লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ডিএসসিসির একজন কর্মকর্তা জানান, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, বায়োগ্যাস এবং জৈব সার উৎপাদনে সহযোগিতার জন্য জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)-র সঙ্গে আলোচনা চলছে।

তিনি বলেন, ডিএসসিসি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণের দিকে এগিয়ে চলেছে এবং আশা করা যায়, সংস্থাটি ২০৩০ সালের মধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কনটেইনার নির্ভরতা কমিয়ে একটি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করতে পারবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ডিএসসিসির বর্তমান সক্ষমতা সম্পর্কে বদরুল আমিন বলেন, সংস্থার ৫৩টি কমপ্যাক্ট ট্রাক রয়েছে এবং আরও প্রায় ১০০ টি ট্রাকের প্রয়োজন। এই ট্রাকগুলো কেনার জন্য সরকারি অর্থ বরাদ্দ দরকার। ডিএসসিসি এলাকায় প্রতিদিন প্রায় আড়াই থেকে ৩ হাজর টন কঠিন ও গৃহস্থালি বর্জ্য এবং ২০-২৫ টন মেডিকেল বর্জ্য সৃষ্টি হয়।

ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আবদুল মোতালেব বলেন, বর্তমানে সিটি কর্পোরেশনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ১২টি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) ব্যবহৃত হয় এবং আগামী জুন মাস নাগাদ আরও ৪১টি এসটিএস চালু করা হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণের অংশ হিসাবে, ডিএসসিসি প্রতিটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে দু’টি করে এসটিএস স্থাপন করবে।

তিনি বলেন, বর্জ্যরে কন্টেইনার এসটিএসগুলোতে রাখা হবে এবং এসটিএসগুলোতে পানির সংযোগ দেওয়া হবে যাতে কন্টেইনারগুলো ধোয়া যায়। প্রতিটি এসটিএস সংলগ্ন ওয়ার্ডে একটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অফিস স্থাপন করা হবে এবং সেখানে একজন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিদর্শক থাকবেন।

বর্জ্য সংগ্রহের বিষয়ে মোতালেব বলেন, ডিএসসিসি স¤প্রতি নগরীর বর্জ্য সংগ্রহ পদ্ধতিতে সংস্কার করেছে। এখন পরিবার থেকে ভ্যানের মাধ্যমে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বর্জ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। বর্জ্য সংগ্রহের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে প্রতিষ্ঠান এক বছরের জন্য নিবন্ধিত হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডের আওতাধীন এলাকায় সব ধরণের প্রতিষ্ঠান থেকে বর্জ্য সংগ্রহের জন্য একটি করে প্রাথমিক সংগ্রহ পরিষেবা সরবরাহকারী নিয়োগ করেছে ডিএসসিসি। চুক্তি অনুসারে, পরিষেবা প্রদানকারীরা তাদের সেবার জন্য প্রতিটি পরিবার এবং প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মাসিক ১০০ টাকার বেশি চার্জ আদায় করতে পারবে না।

বর্জ্য সংগ্রহের সাথে জড়িত স্থানীয় সমাজসেবা সংস্থাগুলোর বর্জ্য সংগ্রহ পদ্ধতিতে পরিবর্তন করা হয়েছে। আগের পদ্ধতিতে সেবা দেয়ার জন্য প্রতিটি পরিবারের সেবাদানকারীকে ৪০-৫০ টাকা করে দিতে হত এবং সামান্য বর্জ্য উৎপাদনকারী দোকানগুলোকে এজন্য কোন চার্জ করা হত না। বদরুল আমিন বলেন, ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ইতিমধ্যে পুনর্গঠিত হয়েছে, তবে নগরবাসীকে শহর পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে আরও সচেতন হতে হবে। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান