বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন চায় ওয়ার্কার্স পার্টি

বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন চায় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। সেই সঙ্গে প্রয়োজনে স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে নির্বাচনে সেনাবহিনীর মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়েছে দলটি। নির্বাচন কমিশন,ইসির সঙ্গে সংলাপ শেষে দলটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার,সিইসি কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা সংলাপ হয়। ১১ অক্টোবর বুধবার বেলা ১১টায় মতবিনিময় সভাটি শুরু হয়। রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাশেদ খান মেনন বলেন,সংবিধানের আলোকেই নির্বাচন হবে। সংবিধানেই আছে সংসদ চলা অবস্থায় নির্বাচন হবে। আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল বলে সংসদ ভেঙে দিতে হতো। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সরকার দৈনন্দিন কার্যাবলী ছাড়া নীতিগত কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে না।

মন্ত্রী মেনন বলেন,সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র, স্থানীয় সরকার ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নির্বাচনকালীন নির্বাচন কমিশনের অধীনস্ত থাকবে। নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা নির্বাচনের আগে ও পরে একটি নির্দিষ্ট সময়কালে নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবেন। এই সময়ে তাদের করা কোনো অপরাধ ও কর্তব্যে অবহেলার জন্য নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিকভাবে যেকোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে এবং সরকার তা বাস্তবায়নে বাধ্য থাকবে।‌ এমন প্রস্তাব দিয়েছি ইসির কাছে।

মেনন বলেন,একান্ত প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা বাহিনী নিয়োগ করতে পারে। স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে তাদের মোতায়েন করতে পারে। তবে তাদেরকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেনন বলেন,বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন আমাদের দেশের জন্য সুখকর নয়।

রোহিঙ্গারা যেন ভোটার হতে না পারে সে ব্যাপারে ইসিকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন জানিয়ে মেনন বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে রোহিঙ্গা ভোটারও আছে। তাদেরও ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।

এসময় দলটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এ প্রসঙ্গে বলেন, রোহিঙ্গাদের আমরা ফিরিয়ে দিতে চাই, কিন্তু তারা ভোটার হলে সেটা আমাদের জন্য কূটনৈতিক সমস্যা।

মোট ১৪টি প্রস্তাবনা ইসির কাছে দিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। অন্যান্য প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে আগামী নির্বাচনের আগে সীমানা পুনঃনির্ধারণ না করা; অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার ব্যবস্থা করা; ব্যালটের পাশাপাশি ইভিএম ব্যবহার করা- তবে এ ক্ষেত্রে জনসচেতনতা ও আস্থা অর্জন বাঞ্চনীয়; স্বতন্ত্র প্রার্থীর ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর গ্রহণের শর্ত বাতিল করা; নির্বাচনে টাকার খেলা বন্ধ করা; নির্বাচনকে সন্ত্রাস ও পেশীশক্তি মুক্ত করা; নির্বাচনে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার বন্ধ করা; নির্বাচনে সবার সমান সুযোগ সৃষ্টি করা ইত্যাদি।

ইসি ঘোষিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী এ সংলাপ হচ্ছে। গত ৩১ জুলাই নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধি সঙ্গে সংলাপে বসে ইসি। এরপর ২৪ আগস্ট থেকে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। এ পর্যন্ত ২৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ১১ অক্টোবর ২০১৭