বাংলাদেশের জন্যই রোহিঙ্গা সঙ্কট আন্তর্জাতিক গুরুত্ব পেয়েছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের পদক্ষেপের কারণেই মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সঙ্কট আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। আমাদের কারণেই রোহিঙ্গা ইস্যু বিশ্বাবাসীর মনোযোগের কেন্দ্র হয়েছে।

জাতিসংঘ সফর শেষে ৭ অক্টোবর মনিবার দেশে ফেরার পর, সকালে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার জেরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। তাদের জন্য অনেকেই দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। সে দরজা খুলেছে বাংলাদেশ। মানবতার জন্যই তাদের আশ্রয় দিয়েছি।

পাঁচ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে মানবিকতার নির্দশন প্রদর্শন করার পাশাপাশি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তৃতায় এই সঙ্কটের প্রতি বিশ্ববাসীর মনোযোগ আকর্ষণ করায় শেখ হাসিনাকে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

সেখানে বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীকে ‘বিপন্ন মানবতার বাতিঘর’ অভিহিত করেন।

শরণার্থী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও খাবারের ব্যবস্থা করায় বিষয়ে সরকারি উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, অসহায় এই মানুষগুলোর জন্য তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যদি প্রয়োজন হয় একবেলা খাবো এবং আরেক বেলার খাবার ওদের ভাগ করে দেবো। বাংলাদেশ যদি এই উদ্যোগ না নিতো তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও এতোটা দৃষ্টি কাড়তো না।

মিয়ানমারকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওরা এমন একটা ভাব দেখালো, যেন যুদ্ধই বেঁধে যাবে। উস্কানি দেওয়া এবং এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইলো যেন বিশ্ব অন্যদিকে দৃষ্টি ফেরাবে। তখন আমি ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবেলার কথা বলি, আমার নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত যেন কোনো কিছুতে না জড়াই সে কথা বলি। অন্যদিকে রোহিঙ্গারা যারা আসছেন তাদের সহযোগিতার জন্য যা যা দরকার তাই করতে থাকি।

সরকারের সব অর্জন জনগণের অবদান

শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকারের যা কিছু অর্জন করেছে তা জনগণের অবদানের কারণেই সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, যা কিছু আমরা অর্জন করেছি, যা কিছু আমরা দেশের জন্য করতে পেরেছি সবই এ দেশের মানুষের কল্যাণে সমর্থনে বা মানুষের দোয়ায় সম্ভব হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে নেয়া আমার লক্ষ্য ছিল। কারণ দেশ দেশের মানুষের নিয়ে জাতির পিতার সপ্ন ছিল। এ দেশের মানুষ যেন সুখে থাকে। বাংলাদেশ যেন সুখী সমৃদ্ধশালী একটি দেশ হয়। বিশ্বের দরবারে যেন মর্যাদা পায়।

দু:স্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আ.লীগের রাজনীতি

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বিপন্ন মানুষকে আশ্রয় দেওয়াই আমাদের জাতীয় কর্তব্য। এটাই আমাদের রাজনীতি। আমরা ১৬ কোটি মানুষ। আরো পাঁচ থেকে সাত লাখ বেশি লোককেও আমরা খাওয়াতে পারবো। এটা আত্মবিশ্বাসের ব্যাপার।

তিনি বলেন, জাতির পিতা আমাদের শিখিয়েছেন, মানুষকে সহায়তা করতে। যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেই, তার থেকেও বড় বিষয় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া। আর সেই সিদ্ধান্ত যেন সঠিক হয়, সেসময়ই সফলতা হয়। সবার সমর্থন পাই। রোহিঙ্গা ইস্যুটিও ঠিত তেমনি।

শেখ হাসিনা বলেন, কে কী দিবে এই আশা নিয়ে আমরা বসে থাকিনি। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে বিপন্ন মানুষের পাশে আমরা দাঁড়িয়েছি। তাদের থাকার স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থা করব। এখন আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে মিয়ানমার রোহিঙ্গা বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে। আমি মিয়ানমারকে আলোচনা শুরু করার জন্য ধন্যবাদ জানাই। আশা করি, আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করব।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ৭ অক্টোবর ২০১৭