বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন করবে ইউনেস্কো

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন করবে।

বৃহস্পতিবার ইউনেস্কোর সদর দফতর প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ৪০তম সাধারণ অধিবেশনে অনুষ্ঠিত প্লেনারি সেশনে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাস হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সাধারণ পরিষদের সভাপতি আলতে চেঙ্গিজার। উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মিজ অদ্রে আজুলে এবং বিভিন্ন কমিটি ও কমিশনের চেয়ারপারসন।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের সঙ্গে ইউনেস্কো যুক্ত হওয়ায় আগামী ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত মুজিববর্ষ উদযাপনকালে দেশজুড়ে নানা কর্মসূচি পালনের সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন আরো ব্যাপক পরিসরে তুলে ধরার সুযোগ সৃষ্টি হলো।

বাংলাদেশের এ বিশাল অর্জনের ঐতিহাসিক মুহূর্তে ইউনেস্কোর সাধারণ সভার ৪০তম অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি কাজী ইমতিয়াজ হোসেন, বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মো. মনজুর হোসেনসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

প্রস্তাবনাটি দীর্ঘ পথপরিক্রমায় সর্বসম্মতিক্রমে চূড়ান্তভাবে গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশের এ প্রস্তাবটি ইউনেস্কোতে উত্থাপনের জন্য ভারত, জাপান, পোল্যান্ড, কিউবা এবং নেপাল কো স্পনসর করে।

এ বছরের এপ্রিল মাসে ইউনেস্কো সদর দফতরে অনুষ্ঠিত ২০৬তম ইউনেস্কো নির্বাহী বোর্ডসভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ইউনেস্কোর সঙ্গে যৌথভাবে উদযাপনের প্রস্তাবটি ইউনেস্কো সাধারণ সভার ৪০তম অধিবেশনে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়। এরপর গত ১৪ নভেম্বর ইউনেস্কো সাধারণ সভার চলতি অধিবেশনের প্রোগ্রাম এবং বাজেট সম্পর্কিত এপেক্স কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবনাটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সুপারিশসহ প্লেনারি সেশনে পাঠায় হয়।

গত ২৮ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন হতে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। এ সংক্ষেপে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী যৌথভাবে উদযাপনের জন্য ইউনেস্কোতে পাঠানোর একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেন।

প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের মহাসচিব মো. সোহরাব হোসাইনকে আহ্বায়ক এবং বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন এর ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মো. মনজুর হোসেনকে সদস্য সচিব করে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রস্তাবনা প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়।

প্রস্তাবনা প্রস্তুত কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন করে প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের প্রোগ্রাম অফিসার সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। প্রস্তাবনা প্রস্তুতি কমিটি দুটি সভার মাধ্যমে খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত করে।

২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত সভায় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, সাবেক শিক্ষা সচিব এবং বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর মো. নজরুল ইসলাম খান এবং নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বিশেষ আমন্ত্রণক্রমে উপস্থিত ছিলেন।

এদের সবার পরামর্শক্রমে বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্যারিসস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সমন্বয়ে প্রস্তুতকৃত চূড়ান্ত প্রস্তাবনা গত ৮ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর ৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠায়।

আজকের বাজার/এমএইচ