বাংলাদেশ মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি গভীরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেছেন, “বাংলাদেশ মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি গভীরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আজ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মানবাধিকার কাউন্সিলের রিপোর্টের উপর অনুষ্ঠিত এক সাধারণ বিতর্কে অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন ।
রাবাব ফাতিমা বলেন, এ প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন দেখা যায় জাতিসংঘের মানবাধিকার ব্যবস্থাপনাসমূহের সাথে আমাদের বিদ্যমান নিবিড় সম্পৃক্ততার মাধ্যমে।
রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে সর্বোচ্চ প্রাধিকারভূক্ত এজেন্ডায় রাখা এবং কাউন্সিলের ৪৭তম সেশনে সর্বসম্মতিক্রমে এ বিষয়ক একটি রেজুলেশন গ্রহণ করার জন্য মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। মিয়ানমারে নিযুক্ত বিশেষ র‌্যাপোটিয়ার ও স্বাধীন তদন্ত ব্যবস্থার কাজ এবং ভূমিকারও প্রশংসা করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বপ্রণোদিত ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করা এবং মিয়ানমারে তাদের নিজভূমিকে বৈষম্য ও নিপীড়নমুক্ত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ অব্যাহত রাখতে কাউন্সিলের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, মানবাধিকার কাউন্সিল গৃহীত রেজুলেশনে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ন্যায়সঙ্গত, সাশ্রয়ী, সময়োপযোগী এবং বৈশ্বিক প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। রাষ্ট্রদূত ফাতিমা রেজুলেশনটিকে স্বাগত জানান ।
তিনি কোভিড-১৯ সৃষ্ট ক্রমবর্ধমান অসমতাসহ এর আর্থ-সামাজিক প্রভাব মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য কাউন্সিলের প্রতি আহ্বান জানান । দক্ষিণের উন্নয়নশীল দেশসমূহ কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিনে ন্যায়সঙ্গত ও সময়োপযোগী প্রবেশাধিকার পাচ্ছেনা বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। এ প্রসঙ্গে অভিবাসীদের প্রতি সব ধরণের বৈষম্য বিলোপ ও তাদের কোভিড ভ্যাক্সিনের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার উপর জোর দেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবাধিকার সংক্রান্ত রেজুলেশন গ্রহণকে স্বাগত জানান। তিনি জলবায়ুজনিত বাস্তুচ্যুতির দিকে বাড়তি মনোযোগ দিতে কাউন্সিলের প্রতি আহ্বান জানান যা বাংলাদেশসহ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়।
নারী ও শিশুদের উপর কোভিডের অসাঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাবের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, “আমরা উদ্বিগ্ন যে অনেক উন্নয়নশীল দেশে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে ঝরে পড়ার হার বেড়েছে এবং মেয়েরা বাল্যবিয়ে, সহিংসতা ও নির্যাতনের উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে”।
তিনি অতিমারির প্রভাব মোকাবিলা করে লিঙ্গসমতা ও নারীর ক্ষমতায়নের অগ্রগতি সাধনে নতুন করে মনোযোগ দেয়ার জন্য কাউন্সিলের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি কাউন্সিল গৃহীত কর্মপ্রক্রিয়া এবং সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি এবং সহযোগিতামূলক মনোভাবের মাধ্যমে মানবাধিকার সমুন্নত রাখার বিষয়টি এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মানবাধিকার কাউন্সিলের সভাপতি রাষ্ট্রদূত নাজহাত শামীম খান এ রিপোর্ট উপস্থাপন করেন।