বাজেট নিয়ে বিএনপির গতানুগতিক সমালোচনার বৃত্তে আবর্তিত : ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, করোনা সংকটকালের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রস্তাবিত এ বাজেট নিয়ে বিএনপি গতানুগতিক সমালোচনার বৃত্তে আবর্তিত।
আজ শনিবার সংসদ ভবন এলাকায় তার সরকারি বাসভবন থেকে আনলাইন সংবাদ সম্মেলনে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে মির্জা ফখরুল ইসলাম গঠনমূলক সমালোচনা করলে সেটা বাস্তবসম্মত হতো। কিন্তু তিনি তা না করে আগেভাগে ঠিক করা, মনগড়া গতানুগতিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।’
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দের কথা বলেছেন। কিন্তু বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতার কথা বিবেচনায় থাকলে তিনি এত সহজে বলতে পারতেন না। রাজনৈতিক বিবেচনায় আকস্মিকভাবে আউট অফ বক্স কোন বরাদ্দ তুলে সেটা চোখধাঁধানো হলেও বাস্ববসম্মত সত্য নয়।
সরকারের বাজেট প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বৈশ্বিক সংকটময় পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার সরকার গণমুখী বাজেট উপস্থাপন করেছে। সঙ্কটকালে মানুষের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক উত্তরণের এ বাজেট নিয়ে বিএনপি গতানুগতিক সমালোচনার বৃত্তে আবর্তিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, গণমানুষের আকাঙ্খা ও মনের ভাষা শেখ হাসিনা বুঝতে পারেন। তাই মানুষের সুরক্ষার পাশাপাশি অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের প্রামাণ্য উপস্থাপন এই বাজেট।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, শুধু বাজেটই নয়, সরকারের যেকোনো কাজের সমালোচনাকে বিএনপি ব্রত হিসেবে বেছে নিয়েছে। দেশের সংকটকালে সাধারণ ছুটির মধ্যে এত বড় একটি বাজেট প্রণয়ন ও উপস্থাপন করে সরকার যে ক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে তার প্রশংসা করতে বিএনপি কৃপণতার পরিচয় দিয়েছে। সমালোচনার জন্য সমালোচনা না করে সরকারের জনহিতকর কাজে এবং বাজেট বাস্তবায়নে আমরা বিএনপিসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
বাজেটে করোনা প্রতিরোধকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনাসংকট মোকাবেলায় স্বাস্থ্য খাতের পাশাপাশি সব খাতকে করোনা প্রতিরোধে গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন খাতে নতুন নতুন কিছু প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। যেগুলো বাজেটে দেখানো সম্ভব হয়নি। করোনা ভাইরাসের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে বাজেটের বাইরে এসব প্রকল্পে বিশেষ বরাদ্দের ব্যবস্থা রেখেছে সরকার।
কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাব নিয়ে সমালোচনাকারীদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, এবারের বাজেটে অপ্রদর্শিত আয় নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে নিয়মিত করার সুযোগ দেওয়ায় কিছু গতানুগতিক সমালোচনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। যারা সমালোচনা করছেন তারা নির্দিষ্ট কিছু এজেন্ডা সামনে রেখেই আসলে সমালোচনা করেন। অন্যদিকে সরকার বাস্তবতার নিরিখেই জাতীয় অর্থনীতির সুনির্দিষ্ট কতিপয় খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রেখেছে। অর্থনীতির সব খাতে এ সুযোগ দেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, করোনা সংকটে সুনির্দিষ্ট খাতগুলোতে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে দেশের টাকা দেশে বিনিয়োগের সুযোগ থাকবে। অর্থ পাচার বন্ধ হবে। বিনিয়োগের এ সুযোগের পাশাপাশি সরকার দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম আরো জোরদারের প্রত্যয় ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার অনিয়ম ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না এটা তাঁর শুদ্ধি অভিযানের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়।