বাণিজ্য বাড়াতে জোটগুলো শক্তিশালী করতে হবে

আজকের বাজার প্রতিবেদন
বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে সাফটা, বিমস্টেক, আশিয়ানের মতো বাণিজ্যিক জোটগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
এজন্য ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী দেশগুলো প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (পিটিএ)-এর কথা চিন্তা করতে পারে। পূর্বের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন সমুদ্রপথে বাণিজ্য অনেক নিরাপদ ও সম্ভাবনাময়। এজন্য পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোয় বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও সিঙ্গাপুরের থিংকট্যাংকসমূহের পার্টনারশিপে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘সেকেন্ড ইন্ডিয়া ওশান কনফারেন্স ২০১৭’-এর প্রথম স্পেশাল প্লেনারি সেশনে বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন। ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ বকসি স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তোফায়েল আহমেদ বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের টেকসই উন্নয়নের জন্য ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষের সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে। আমার বিশ্বাস, সম্মিলিতভাবে কাজ করলে ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী দেশগুলোর নিরাপত্তা, বাণিজ্য-বিনিয়োগ এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব।
তিনি বলেন, ভারত মহাসাগর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম। এ পথ দিয়ে বিশ্বের অর্ধেক কনটেইনারবাহী শিপ, তিন ভাগের এক ভাগ কার্গো ট্রাফিক, তিন ভাগের দুই ভাগ তেলবাহী জাহাজ চলাচল করে। বাণিজ্যিক দিক থেকে এ অঞ্চল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ অঞ্চলের নিরাপত্তা, পাইরেসিরোধী অবস্থান এবং সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপ নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।
মন্ত্রী বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের দারিদ্র্যদূরীকরণ, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য বহুমুখী বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এজন্য প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, বাণিজ্য জাহাজের নিরাপদ চলাচলের মাধ্যমে বাণিজ্য উন্নয়ন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের মহাসাগরের মধ্যে সবচেয়ে দুর্যোগপূর্ণ এলাকা হলো ভারত মহাসাগর। বিশ্বের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যে মানবিক বির্পযয় ঘটে, তার ৭০ ভাগই হয় এ অঞ্চলে। সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ায় বন্যায় বাংলাদেশ, ভারত, নেপালে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি ঘটেছে। সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ ধরনের ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশের ভারসাম্য না থাকায় কৃষি এবং খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বাস করে নিরপেক্ষ বাণিজ্য, মানবকল্যাণ, অন্যান্য দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা সম্ভব। এর সুফল সংশ্লিষ্ট সবাই ভোগ করতে পারে উল্লেখ করেন তোফায়েল আহমেদ।
ভারতের ইনস্টিটিউট অব চাইনিজ স্টাডিজের পরিচালক এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত অশোক কান্থার সভাপতিত্বে সেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী রানিল উইকরেমিসিং। এতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুশমা সরাজ, সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাক্রিশানান, নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিশনা বাহাদুর মাহারা, মরিশাসের ওশান ইকোনমি, মিনারেল রিসোর্সেস ও ফিশারিজ অ্যান্ড শিপিং বিষয়ক মন্ত্রী প্রেমদূত কনজো, শ্রীলংকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিলক মারাপানা, জাপানের পররাষ্ট্রবিষয়ক পার্লামেন্টারি ভাইস-মিনিস্টার আইওয়া হোরি বক্তব্য রাখেন।
তিন দিনব্যাপী ‘সেকেন্ড ইন্ডিয়া ওশান কনফারেন্স ২০১৭’-এ ২৯টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
এবারের কনফারেন্সের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল পিস, প্রোগ্রেস অ্যান্ড প্রসপারেটি। প্রথম সম্মেলন ২০১৬ সালে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হয়।