প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি গ্রামের পর গ্রাম হেঁটেছি। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। কখনও দুর্ভিক্ষ হয়েছে, দুর্ভিক্ষ পীড়িত এলাকায় গিয়েছি। কখনও ঝড় হয়েছে সেখানে রিলিফ দিতে গিয়েছি। পেয়েছি সাধারণ মানুষের ভালবাসা। কত মা-বোন ছুটে এসেছে, কাছে টেনে নিয়েছে, বুকে টেনে নিয়েছে। মাটির ঘরে বসিয়েছে। উঠোনের রাস্তায় ডাব কেটে দিয়ে বলেছে, মা এটা খাও। মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে শুধু বলেছে, বাবা জীবনটা দিয়ে গেছে তুমিও পথে নেমেছো মা? তুমি পথে নামছো আমাদের জন্য?’
১২ জুলাই বুধবার জাতীয় সংসদে জিন্নাতুন নেসা বাপ্পির এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বক্তব্যের একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই যে ভালবাসার পরশ, মা-বাবা হারানোর বেদনাতো সেখান থেকেই ভুলে গেছি। সেখান থেকেই শক্তি পেয়েছি। এই মানুষগুলোর জন্যইতো আমাই বাবা জীবন দিয়েছেন। তাই এদের জন্য জীবনের যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। কোনো ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা নয়, আজকে ক্ষমতা আমার জন্য ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা পুরণের জন্য না। আমি রাষ্ট্রপতির মেয়ে ছিলাম, প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে ছিলাম। আমি নিজে প্রধানমন্ত্রী ছিলাম ২ বার। এইবারসহ ৩বার। কখনও নিজের ভাগ্যে কি করব সে কথা জীবনেও চিন্তা করিনি। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়েছি আল্লাহর রহমতে তারাও আমাকে সাহায্য করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে মানুষের জন্য যে কিছু করতে পারছি এটাই আনন্দ। ক্ষমতাটা হচ্ছে মানুষের সেবা করার সুযোগ। সে সুযোগটা যে পাচ্ছি এবং জনগণ যে ভোট দিয়ে আমাকে বারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছে এবং আমাদের পার্লামেন্টে আমাকে তাদের নেতা বানিয়েছে, আমি প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশের সেবা করতে পারছি। এটাইতো সবচেয়ে বড় পাওয়া যে, দেশের মানুষের জন্য কিছু করার সুযোগ পেয়েছি।’
অন্যদিকে সংসদ সদস্য আয়েনউদ্দিনের (রাজশাহী-৩) তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমানে দুই মেয়াদে অর্থাৎ ২০০৯ হতে ২০১৭ সালের ১৫ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে মোট ৪৬ লাখ ৭৯ হাজার ২২৯ জন কর্মী বিদেশে গেছেন। বৈদেশিক কর্মসংস্থানখাতকে আমরা থ্রাস্ট সেক্টর হিসেবে ঘোষনা করেছি। এ খাতের গুরুত্ব অপরিসীম বিবেচনায় আমরা বিদ্যমান শ্রমবাজার ধরে রাখার পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রম বাজার সৃষ্টির উপর জোর দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বিগত জোট সরকারের আমলে যেখানে বিশ্বের মাত্র ৯৭টি দেশে কর্মী পাঠানো হতো সেখানে নতুন আরো ৬৫টি দেশে কর্মী পাঠানোসহ বর্তমানে এই সংখ্যা ১৬২টি দেশে উন্নীত হয়েছে। নতুনশ্রম বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশ দূতাবাস/হাইকমিশন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনীয় সহযোগিতায় সরকার শ্রমবাজার সম্প্রসারণে কাজ করছে। এসময় প্রধানমন্ত্রী শ্রম বাজার সম্প্রসারণের বিস্তারিত তুলে ধরেন সংসদে।
আজকের বাজার:এলকে/ এলকে/ ১২ জুলাই ২০১৭