ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি এক যুবককে পিটিয়ে মুখমণ্ডলে পেট্রল ঢেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

নিহত বাংলাদেশি যুবা হলেন, কবিরুল ইসলাম (৩২)। সে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের আজিজ মোল্লার ছেলে।

শুক্রবার দিবাগত রাতে সাতক্ষীরার কুশখালী সীমান্তের ওপারে ভারতের দুদলিতে এ ঘটনা ঘটে।

তবে, বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী- বিজিবির ৩৩ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম মহিউদ্দিন খন্দকার জানান, তারা ঘটনা শুনেছেন, কিন্তু বিএসএফ যে এ বিষয়ে দায়ী, এমন তথ্য তাদের কাছে নেই। খোঁজখবর নিয়ে পরে বিস্তারিত জানাবেন।

নিহত কবিরুলের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, তাদের বাড়ির সীমান্তের ওপারে চা-পাতা ও চিনিসহ ভারতীয় কিছু মালামালের জন্য রাতে ভারতের দুদলিতে যায় কবিরুল। বিএসএফ তাকে ধরে পিটিয়ে ও নির্যাতন করে মুখমন্ডলে পেট্রল ঢেলে বাংলাদেশের কুশখালি সীমান্তের ছয়ঘরিয়া এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাইফুল্লাহ আল কাফি বলেন, নিহত কবিরুলের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া দাহ্য পদার্থের মতো কিছুতে তার মুখমণ্ডল পুড়ে গেছে।

কুশখালি ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শ্যামল জানান, কবিরুল চা-পাতা আনতে ভারতে গিয়েছিল। বিএসএফ তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে ও পরে মুখে পেট্রল ঢেলে দেয়।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তার দেহে নির্যাতনের চিহ্ণ পাওয়া গেছে। মুখে পেট্রল ঢেলে দেওয়ার বিষয়টি মেডিকেল রিপোর্ট ছাড়া নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।

তিনি জানান, কবিরুলের লাশের ময়না তদন্ত করা হবে।

নিহত কবিরুলের মামা ফারুক হোসেন জানান, তার ভাগ্নে শুক্রবার রাতে কুশখালি সীমান্তের বিপরীতে ভারতের দুদলি এলাকায় যায়। সেখান থেকে ভারতীয় চা-পাতাসহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে আসার সময় বিএসএফের নজরে পড়ে। বিএসএফ তাকে মারপিট করে। পরে তার মুখমন্ডলে পেট্রল ঢেলে দেয়। সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বাংলাদেশ সীমান্তে রেখে যায়।

স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখান থেকে রাত ১২টার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিবির কুশখালি বিওপির নায়েক সুবেদার আরিফ বলেন, এমন কোনো ঘটনা সম্পর্কে তার জানা নেই।

আজকের বাজার/এমএইচ