বিদ্যুতের টেকসই উন্নয়নে বৈচিত্র আনা জরুরি

দেশের বিদ্যুৎ খাতের টেকসই উন্নয়নে বৈচিত্রকরণ জরুরি। তবে এই খাতে বড় প্রকল্পের জন্য কম সুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ এবং সরকারের সহায়তা পেলে এই খাত আরও এগিয়ে যাবে।

বৃহস্পতিবার ৭ ডিসেম্বর বিকেলে রাজধানীর শিল্পকলা মিলনায়তনে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো ২০১৭ এর ‘বিদ্যুৎ খাতের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারের সেশন চেয়ার দ্য ডেইলি ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার চিফ রিপোর্টার শাহেদ সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিটি ব্রোকারেজের হেড অব রিসার্চ মো. নাফিজ আল তারিক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ দিন দিন বেড়েই চলেছে। আমাদের গ্যাসের মজুদ ক্রমান্বয়ে কমার কারণেই বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এতে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছে দেশের বিদ্যুৎ খাত। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এই খাতের বৈচিত্রকরণ জরুরি।

মো. নাফিজ আল তারিক বলেন, খুব শিগগিরই তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক (এলএনজি) বিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ শুরু হবে। তবে ভোক্তা পর্যায়ে এর মূল্য নির্ধারণও একটা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা যাবে।

সেমিনারে প্যানেল আলোচক ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমসের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা আফরোজ আলম বলেন, বিদ্যুৎ খাতের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে হলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মুনাফা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে অর্থায়ন কোনো সমস্যা নয়।

তিনি আরও বলেন, বিদেশি ঋণের ওপরই আমাদের বেশিরভাগ প্রকল্প বাস্তবায়ন নির্ভর করে। কারণ বিদেশি ঋণে সুদের হার তুলনামূলক কম থাকে। ব্যাংকের তারল্য পর্যাপ্ত থাকলেও দীর্ঘ মেয়াদী অর্থায়নে পুঁজিবাজারকে সহায়ক হবে।

বিএসইসির সহায়তা পেলে নিজেদের অর্থায়নে বড় প্রকল্পের কাজ করা সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে জনবল একটি বড় সমস্যা। এই খাতে দেশের বড় বড় কোম্পানিগুলোতে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

এসময় বারাকা পাওয়ারের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. মোনোয়ার আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে; তা বাস্তবায়ন করা খু্ব কঠিন হবে না। তবে প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ, দক্ষ জনবল, সুদের হার, ট্যাক্সেশন সমস্যার সমাধান করতে হবে।

সেমিনারে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিসট্রিবিউশন কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা এবাদত হোসেন ভূঁইয়া বলেন, সরকারের সহায়তায় এ খাত আগের তুলনায় অনেক এগিয়ে গেছে। তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে আমরা অনেক পিছিয়ে। বিশেষকরে বড় প্রকল্পের ক্ষেত্রে বিদেশি ঋণের নির্ভরতা রয়েই গেছে। এ থেকে বেরিয়ে এসে স্থানীয় ঋণের সুদের হার কমলে বেসরকারি উদ্যোক্তারা একটি শক্তিশালী ভিত পাবে।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ৭ ডিসেম্বর ২০১৭