বিদ্যুতের দাম বাড়লে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে: ডিসিসিআই

বিদ্যুতের দাম আবার বাড়ানো হলে উৎপাদনমুখী শিল্প বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, স্টিল রি-রোলিং, টেক্সটাইল খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এসব খাতে প্রায় ৮ থেকে ১০ শতাংশ উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যেতে পারে। এতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ২৪ সেপ্টেম্বর রোববার এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য জানিয়েছে।

ফের বিদ্যুতের দাম বাড়াতে ৬টি বিতরণ কোম্পানির প্রস্তাবের উপর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর গণশুনানি শুরু করতে যাচ্ছে। এ প্রস্তাব পাশ হলে খুচরা পর্যায়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে যে বিদ্যুত খরচ পড়ত ৯ টাকা ১৬ পয়সা, তা বেড়ে দাঁড়াবে ১০ টাকায়;

বাণিজ্যিক ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে ১১ টাকা ৯৮ পয়সা থেকে বেড়ে ১২ টাকা ৯৮ পয়সা, বৃহৎ শিল্পকারখানার ক্ষেত্রে ৯ টাকা ৫২ পয়সা থেকে ১০ টাকা ৩২ পয়সা এবং গৃহস্থালীতে ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৫ টাকা ৬৩ পয়সা থেকে ৬ টাকা ১০ পয়সা হবে।

বিদ্যুতের দাম ফের বাড়ানোর এ প্রস্তাবে উদ্বেগ জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

সংগঠনটি মনে করে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য ফের বাড়ানো হলে তা অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

ডিসিসিআই এর বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমানে শিল্প ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে পিডিবির বিদ্যুতের দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে প্রায় ১৮০ শতাংশ বেশি, যা প্রস্তাবিত মূল্য বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য অপরিবর্তিত রেখে বিতরণ পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেও পিডিবির ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যেতে পারে এবং মূল্য সমতার এ সামঞ্জস্য নীতি গণমুখী মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করবে বলে মনে করে ডিসিসিআই।

আরও বলা হয়, বেসরকারি খাতের ফার্নেস ওয়েল/হেভি ফুয়েল ওয়েল ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা বিপিসির প্রদানকৃত দরের তুলনায় প্রায় ৯০ শতাংশ কম মূল্যে বিদেশ থেকে ফার্নেস ওয়েল/হেভি ফুয়েল ওয়েল আমদানি করতে পারে।

স্বল্প উৎপাদন ব্যয় নিশ্চিত করতে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের আরও অধিক হারে ফার্নেস ওয়েল আমদানি করতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি ডিসিসিআই আহ্বান জানাচ্ছে।

এ মুহূর্তে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে বরং সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের পরিচালন ও ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা, সিস্টেম লস আরও হ্রাস করতে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ কার্যক্রমে বেসরকারি খাতকে অধিক পরিমাণে অন্তর্ভূক্তকরণের জন্য ডিসিসিআই সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

ঢাকা চেম্বার সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে বিদ্যুৎ-এর ট্যারিফ বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাহার এবং সকল সরকারি ও বেসরকারি স্টেকহোল্ডারদের সাথে নিয়ে একটি জ্বালানি মনিটরিং কমিটি গঠনের আহ্বান জানায়। একইসঙ্গে কিভাবে দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণে উদ্যোগ নেওয়া যায়- তার বন্দোবস্ত করার আহ্বান জানানো হয়।

আজকের বাজার: এলকে / এলকে ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭