বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ৩০ নভেম্বর হরতাল

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সারা দেশে আধা বেলা হরতালের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা।

ওই দিন সকাল ছয়টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত এ হরতাল পালিত হবে।

বৃহস্পতিবার ২৩ নভেম্বর রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সংবাদ সম্মেলন করে বিদ্যুতে দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এর ফলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়াবে। আগামী ডিসেম্বর থেকে নতুন এ হার কার্যকর হবে। তারই প্রেক্ষিতে এই হরতালের ডাক দিয়েছে সংগঠনগুলো।

এ এদিকে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, নিজেদের লুটপাটের টাকা জোগাড় করতে বেপরোয়া সরকার আবরো বিদ্যুতের দাম বাড়ানোরই ঘোষণা দিল। সমস্ত তথ্য উপাত্ত বলছে দাম কমানো সম্ভব, সেখানে দাম বাড়ানো ঘোষণার মানে হচ্ছে জনগণকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো। এইভাবে প্রতিদিন জনগণকে অপমান করে চলেছে এই সরকার।

তিনি লিখেছেন, দেশটা কারো জমিদারী নয়। নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য, নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য আসুন লড়াই করি। দাম বাড়ানোর ঘোষণা বাতিলের দাবিতে আগামী ৩০ নভেম্বর দেশব্যাপী সকাল ৬টা- বেলা ২টা সর্বাত্মক হরতাল সফল করি। আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বাধ্য করি গণদাবি মানতে।

উল্লেখ, চলতি বছর মার্চে বিভিন্ন খাতে গ্যাুসের দাম ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর পর জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেছিলেন, বিদ্যুৎ খাতে গ্যাসের দাম বাড়ায় বিদ্যুতের দামও সমন্বয় করা প্রয়োজন। এর পরই বিতরণ কোম্পানিগুলো বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বিইআরসিতে পাঠায়।

এর মধ্যে পিডিবি পাইকারি পর্যায়ে ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করে। আর গ্রাহক পর্যায়ে ডিপিডিসি ছয় দশমিক ২৪ শতাংশ ডেসকো ছয় দশমিক ৩৪ শতাংশ, ওজোপাডিকো ১০ দশমিক ৩৬ শতাংশ আর আরইবি ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করে।

এর আগে সর্বশেষ ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিদ্যুতের দাম বাড়ায় সরকার। ওই সময়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ বাড়ানো হয়। এতে মাসে ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের খরচ বাড়ে ২০ টাকা; ৬০০ ইউনিটের বেশি ব্যবহারে খরচ বাড়ে কমপক্ষে ৩০ টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান মোনোয়ার হোসেন বলেন, বিদ্যুতের ন্যূনতম চার্জ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে মোট গ্রাহকের ১৩ শতাংশ বা ৩০ লাখ লাইফ লাইন গ্রাহকের (০-৫০ ইউনিট) বিদ্যুৎ বিল হ্রাস পাবে।

তাছাড়া বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) প্রায় ৬০ লাখ (মোট গ্রাহকের ২৫ শতাংশ) লাইফ- লাইন গ্রাহকের জন্য খুচরা বিদ্যুৎ মুল্যহার অপরিবর্তিত থাকবে। অর্থাৎ সারা দেশে মোট গ্রাহকের প্রায় ৩৮ শতাংশেরই বিল বৃদ্ধি পাবে না।

তিনি বলেন, সেচের জন্য যেসব কৃষকরা বিদ্যুৎ নিয়ে থাকেন; তারা একটা মওসুম বিদ্যুৎ নিয়ে থাকেন। অন্য সময়ে তারা বিদ্যুৎ নেন না। তাই অন্য সময়ে জন্য আর তাদের বিদ্যুৎ খরচ দেওয়া লাগবে না।

আজকের বাজার: আরআর/ ২৩ নভেম্বর ২০১৭