বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিতে বিএসইসি চুপ করে বসে থাকবে না

বিনিয়োগকারীর ক্ষতি হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা চুপ করে বসে থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন। তিনি বলেন, আইন প্রণয়ন ও তার কঠোর বাস্তবায়নে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করে আসছে বিএসইসি।

বৃহস্পতিবার ৭ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো-২০১৭ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ব্যবসা বাণিজ্য বিষয়ক নিউজ পোর্টাল অর্থসূচক ৩ দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করেছে।

ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে কোম্পানির শেয়ারের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে  অনিয়ম হলে চুপ করে বসে থাকতে পারে না বিএসইসি। যেখানে বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিএসইসি আইন প্রণয়ন এবং তার কঠোর বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভূমিকা রাখে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমের ফলে পুঁজিবাজার এখন স্থিতিশীল অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। এখন সময় এসেছে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীকে আকৃষ্ট করার। বিনিয়োগ জ্ঞান অর্জন করে নিজেকে সমৃদ্ধ করার। কারণ নিজের জ্ঞান ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করতে পারলে বিনিয়োগে ঝুঁকি কমানো সম্ভব হবে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বিনিয়োগ নির্ভর পুঁজিবাজার গড়ে না উঠলে তা কখনো স্থিতিশীল হবে না। তাই বিনিয়োগ নির্ভর পুঁজিবাজার গঠনের জন্য আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। কেননা দীর্ঘমেয়াদে অর্থায়নের জন্য আমাদের পুঁজিবাজার হতে পারে নির্ভরযোগ্য।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. একে মোমেন বলেন, আমাদের পুঁজিবাজার এগিয়ে নিতে হলে একটি সুপরিকল্পিত রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে। কারণ আগামী ৫ বছরে পুঁজিবাজার কোথায় কোন অবস্থানে থাকবে তার পরিকল্পনা থাকতে হবে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে ব্যবসা খাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। বিশেষ করে পুঁজিবাজার স্টেকহোল্ডারদের মাঝে শক্তিশালী সমন্বয় থাকতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

এসময় বিএসইসি কমিশনার ড. স্বপন কুমার বালা বলেন, দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের জন্য পুঁজিবাজারকে কীভাবে ব্যবহার করা যায়- তা নিয়ে কাজ করতে হবে। কারণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বড় বিনিয়োগ এখন দুরূহ ব্যাপার।

ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সাদেক বলেন, পুঁজিবাজারে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য এমন ধরনের আয়োজন প্রশংসনীয়। এতে বাজারের আস্থা ও গতিশীলতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, আমাদের পুঁজিবাজারে আগে যে শঙ্কা ছিল- তা এখন অনেকাংশেই কমে এসেছে। তার প্রধান কারণ হল আমাদের সরকার আন্তারিকভাবে চান এই পুঁজিবাজারের উন্নতি হোক।

তিনি বলেন, এ মেলার মূল উদ্দেশ্য হল পুঁজিবাজারকে ঝুঁকিমুক্ত করার পাশাপাশি সচেতন বিনিয়োগকারী গড়ে তোলা। আর এজন্যই পুঁজিবাজারের ঝুঁকি যেন আগের তুলনায় কমে আসে সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা সবাই কাজ করছি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা স্টক এক্সেচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান।

তিনি বলেন, এই ধরনের আয়োজন বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে আরও আকৃষ্ট করতে সাহায্য করবে। খুব শিগগিরই আমরা পুঁজিবাজারের জন্য এমন কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে আসছি; যা আন্তর্জাতিকভাবে দেশের পুঁজিবাজারকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবে।

এসময় এসময় ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সানাউল হকসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, ব্রোকারেজ হাউস এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রতিনিধিও বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত ছিলেন।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ৭ ডিসেম্বর ২০১৭