র্যাবের হাতে আটক বাংলাদেশ বিমানের পাইলট (ফার্স্ট অফিসার) সাব্বির বিমান নিয়ে নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল।
সাব্বির রাজধানীর মিরপুরে দারুস সালাম এলাকায় নিহত জঙ্গি আবদুল্লাহ’র ‘সহযোগী’ বলে জানিয়েছে র্যাব।
৩১ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব সদর দপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।
জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যাওয়া গ্রেপ্তার পাইলট সাব্বিরের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে এসব তথ্য জানান তিনি। সাব্বির এনাম ছাড়া গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন, সুলতানা পারভীন, আসিফুর রহমান আসিফ ও মো. আলম।
ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, এর আগে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পেয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর মিরপুর মাজার রোডের বর্ধন বাড়ি এলাকায় ‘কমল প্রভা’ নামের একটি বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব।
অভিযান চলার সময় ওই বাড়ির পঞ্চম তলায় ‘জঙ্গি আস্তানায়’ ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণ হয়। অভিযানে জঙ্গি আবদুল্লাহ ও তার পরিবার আত্মসমর্পণের জন্য সময় নেয়। কিন্তু পরে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আবদুল্লাহ, তার দুই স্ত্রী, দুই সন্তান ও দুই সহযোগী আত্মাহুতি দেয়।
তিনি বলেন, এরপর বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে র্যাবের গোয়েন্দা দল ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ অক্টোবর নারায়াণঞ্জ ফতুল্লাহ থেকে আব্দুল্লাহ’র অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী জেএমবি সদস্য বিল্লাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।
পরে তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী র্যাব-৪ এর একটি দল মঙ্গলবার রাতে মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিহত জঙ্গি আব্দুল্লাহর এসব সহযোগীদের গ্রেপ্তার করে।
বিমান নিয়ে সাব্বিরের নাশকতার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, উড্ডয়নরত বিমান জিম্মি করে সরকারকে বিভিন্নভাবে আঘাত করার পরিকল্পনা ছিল সাব্বিরের। এছাড়া বিমানের যাত্রীদের জিম্মি করে মধ্যপ্রাচ্যের যে কোনও দেশে অবতরণেরও পরিকল্পনা ছিল তার।
‘পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সাব্বির বিমান চালিয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের বাসভবনে আঘাত করা এবং বিমানের যাত্রীদের জিম্মি করে মধ্যপ্রাচ্যে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছিল। তার চাকুরীর ভাতা বাবদ ১০ লাখ টাকা পাওয়ার কথা ছিল এবং উক্ত টাকা পেলেই আব্দুল্লাহর মাধ্যমে সংগঠনে দান করবে বলে আব্দুল্লাহকে কথাও দিয়েছিল সাব্বির।’
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে থেকে সাব্বির বাংলাদেশ বিমানের পাইলট হিসেবে কাজ করছে। তিনি বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং-৭৩৭ পরিচালনা করে থাকেন। তিনি সর্বশেষ গত ৩০ অক্টোবর ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন।
প্রেপ্তারকৃত সাব্বির তুর্কি থেকেও বিমান চালনার উপর প্রশিক্ষণ গ্রহন করে। সে দুবাই, কাতার, মাসকট, সিংগাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ছাড়াও অন্যান্য আরো অনেক দেশে বাংলাদেশ বিমানের পাইলট হিসেবে কাজ করেছে বলে জানান মুফতি।
নিহত জঙ্গি আব্দুল্লাহর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার কথা উল্লেখ করে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, নিহত জঙ্গি আব্দুল্লাহ’র সঙ্গে সাব্বিরের খুব ভালো সম্পর্ক ছিল।
সে মানিক ওরফে ফরহাদ ওরফে সারোয়ার জাহানের নিকট হতে বায়াত গ্রহণ করে। গুলশান হামলার আগে ও পরে আব্দুল্লাহ, গ্রেফতারকৃত পাইলট সাব্বির, সারোয়ার একত্রে নাশকতার পরিকল্পনা করে।
আজকের বাজার : এমএম / ৩১ অক্টোবর ২০১৭