রাজধানীর দারুসসালাম থানার বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট সাব্বিরসহ ৪ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দিয়েছে আদালত। বুধবার শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীব এ আদেশ দেন।
১ নভেম্বর বুধবার তাদের ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা।
পরে শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীব পাইলট সাব্বিরকে ৭ দিন, তার মা মোসা. সুলতানা পারভীনকে ৫ দিন, অন্য দুই আসামি আসিফুর রহমান আসিফ ও মো. আলমের ৬ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত সোমবার রাতে রাজধানীর মিরপুরের দারুসসালাম এলাকা থেকে তাদের আটক করে র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তাদের আটকের পর মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, বাংলাদেশ বিমানের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা (পাইলট) সাব্বির বিমান নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল। সে রাজধানীর মিরপুরে দারুস সালাম এলাকায় নিহত জঙ্গি আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ ‘সহযোগী’ ছিলেন।
ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, এর আগে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পেয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর মিরপুর মাজার রোডের বর্ধন বাড়ি এলাকায় ‘কমল প্রভা’ নামের একটি বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযান চলার সময় ওই বাড়ির পঞ্চম তলায় ‘জঙ্গি আস্তানায়’ ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণ হয়। অভিযানে জঙ্গি আবদুল্লাহ ও তার পরিবার আত্মসমর্পণের জন্য সময় নেয়। কিন্তু পরে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আবদুল্লাহ, তার দুই স্ত্রী, দুই সন্তান ও দুই সহযোগী আত্মাহুতি দেয়।
বিমান নিয়ে সাব্বিরের নাশকতার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, উড্ডয়নরত বিমান জিম্মি করে সরকারকে বিভিন্নভাবে আঘাত করার পরিকল্পনা ছিল সাব্বিরের। এছাড়া বিমানের যাত্রীদের জিম্মি করে মধ্যপ্রাচ্যের যে কোনো দেশে অবতরণেরও পরিকল্পনা ছিল তার।
‘পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সাব্বির বিমান চালিয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের বাসভবনে আঘাত করা এবং বিমানের যাত্রীদের জিম্মি করে মধ্যপ্রাচ্যে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছিল। তার চাকুরীর ভাতা বাবদ ১০ লাখ টাকা পাওয়ার কথা ছিল এবং ওই টাকা পেলেই আব্দুল্লাহর মাধ্যমে সংগঠনে দান করবে বলে আব্দুল্লাহকে কথাও দিয়েছিল সাব্বির।’
প্রেপ্তারকৃত সাব্বির তুরষ্ক থেকেও বিমান চালনার উপর প্রশিক্ষণ গ্রহন করে। সে দুবাই, কাতার, মাসকট, সিংগাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ছাড়াও অন্যান্য আরো অনেক দেশে বাংলাদেশ বিমানের পাইলট হিসেবে কাজ করেছে বলে জানান মুফতি।
নিহত জঙ্গি আব্দুল্লাহর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার কথা উল্লেখ করে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, নিহত জঙ্গি আব্দুল্লাহর সঙ্গে সাব্বিরের খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। সে মানিক ওরফে ফরহাদ ওরফে সারোয়ার জাহানের নিকট হতে বায়াত গ্রহণ করে। গুলশান হামলার আগে ও পরে আব্দুল্লাহ, গ্রেফতারকৃত পাইলট সাব্বির, সারোয়ার একত্রে নাশকতার পরিকল্পনা করে।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে ১ নভেম্বর ২০১৭