যেখানে উন্নত আর ধনী দেশগুলোর স্কুলগুলোতে শিক্ষার বিষয়গুলোকে বেশ গুরুত্ব সহকারে দেখা হলেও অসংখ্য দেশের স্কুলগুলোতে মেয়েদের উপস্থিতিই নগণ্য। আন্তর্জাতিক মেয়ে শিশু দিবস উপলক্ষে ক্যাম্পেইন ‘ওয়ান’ পরিচালনা করছে জাতিসংঘ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিগত দশকে বিশ্বের বেশ কিছু দরিদ্র দেশে স্কুল সঙ্কট মোকাবেলায় কোন উন্নতিই হয়নি। পশ্চিমা ধনী দেশগুলোতে যেখানে মেয়েরা পড়াশোনায় ছেলেদের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে, সেখানে সাব-সাহারান আফ্রিকার মতো দরিদ্র দেশে স্কুলগুলোয় মেয়েদের খুঁজে পাওয়াটাই বরং দুষ্কর। সেখানে মেয়েদের পড়াশোনা অবান্ধব ১০টি দেশের তালিকা তৈরি করেছে।
এই ১০টি দেশের বেশিরভাগ স্কুলগুলোতেই মেয়েদের উপস্থিতি নগণ্য। দেশগুলোর অধিকাংশ পরিবারই দারিদ্র্য, স্বাস্থ্যহানি, পুষ্টি-হীনতা এবং যুদ্ধ-সংঘাতের কারণে উৎখাতের শিকার। সেখানে প্রাথমিক স্কুলের সুবিধাহীন মেয়েদের পরিমাণ, মাধ্যমিক স্কুলের সুবিধাহীন মেয়েদের পরিমাণ, প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করতে পারা মেয়েদের পরিমাণ, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা শেষ করতে পারা মেয়েদের পরিমাণ, গড়ে কত বছর করে মেয়েরা স্কুলে যায়, নারীদের অশিক্ষার হার, শিক্ষক প্রশিক্ষণের পরিমাণ বা মাত্রা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ও শিক্ষায় সরকারী ব্যয়কে সূচক ধরা হয়।
এই সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে মেয়েদের পড়াশোনা ছেড়ে দেয়ার হার অন্যান্য অঞ্চলগুলোর চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বলেও জাতিসংঘের পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে।
যে আফ্রিকান ১০টি দেশ বাছাই করা হয়েছে সেগুলো হলো-
১. দক্ষিণ সুদান: অনেক দ্বন্দ্ব-সংঘাতের সম্মুখীন হওয়া ফলে ধ্বংস হয়েছে অসংখ্য স্কুল, পরিবারগুলো বাধ্য হয়েছে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে। এখানে তিন-চতুর্থাংশ মেয়েই প্রাথমিক স্কুলের গণ্ডি পার হতে পারে না।
২. মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র: ৮০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন মাত্র শিক্ষক।
৩. নাইজার: ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সের মেয়েদের মধ্যে মাত্র ১৭ শতাংশ শিক্ষিত।
৪. আফগানিস্তান: তীব্র লিঙ্গ বৈষম্য আছে যেখানে স্কুলগুলোতে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের পরিমাণ বেশি।
৫. চাদ: মেয়ে শিশু এবং নারীদের শিক্ষার্জনের ক্ষেত্রে অনেক সামাজিক আর অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা কাজ করে।
৬. মালি: মাত্র ৩৮ শতাংশ মেয়েরা প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডি পেরোতে সক্ষম হয়।
৭. গিনি: ২৫ বছর বয়সের বেশি নারীরা পড়াশোনায় ১ ঘণ্টারও কম সময় ব্যয় করতে পারে।
৮. বুরকিনা ফাসো: এখানে মাত্র ১ শতাংশ মেয়েরা মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করতে পারে।
৯. লাইবেরিয়া: প্রাথমিক পর্যায়ের দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীই স্কুলে যায় না।
১০. ইথিওপিয়া: প্রতি ৫ জন মেয়ের মধ্যে ২ জনের ১৮ বছর বয়সের আগেই বিয়ে হয়ে যায়।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২৫ অক্টোবর ২০১৭