বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের ৮২তম জন্মবার্ষিকী আজ

আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি। বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের ৮২তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৩৬ সালের এইদিনে নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডীবরপুর ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন (বর্তমান নাম নূর মোহাম্মদ নগর)। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আমানত শেখ, মায়ের নাম জেন্নাতুন্নেছা মতান্তরে জেন্নাতা খানম। ছোটবেলাতেই তিনি বাবা-মাকে হারান। লেখাপড়া করেন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত।

দিবসটি পালন উপলক্ষে নূর মোহাম্মদ নগরে স্মৃতি স্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ, র‌্যালি, গার্ড অব অর্নার প্রদান, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, আলোচনাসভা ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে।

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ’র জন্মস্থান মহিষখোলার নাম পরিবর্তন করে ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ নূর মোহাম্মদ নগর করা হয়। এরপর উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে যায় নূর মোহাম্মদ নগর। তার স্মৃতি রক্ষায় নূর মোহাম্মদ নগরে নির্মাণ করা হয়েছে ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’ এবং স্মৃতিস্তম্ভ। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয়।

তিনি ১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর, বর্তমানে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ-বিজিবি) যোগদান করেন। দিনাজপুর সীমান্তে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই বদলি হন যশোর সেক্টরে। পরবর্তীতে তিনি ল্যান্স নায়েক পদোন্নতি পান। মুক্তিযুদ্ধের সময় যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮নং সেক্টরে তিনি যুদ্ধ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোর জেলার গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে তিন সঙ্গীকে বাঁচাতে নিজের জীবন উৎসর্গ করার অনন্য নজির স্থাপন করেন তিনি। ওইদিন পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে সহযোদ্ধা নান্নু মিয়া গুরুতর আহত হলে তাকে কাঁধে নিয়েই এলএমজি হাতে শত্রুপক্ষের সঙ্গে তিনি যুদ্ধ করেন। হঠাৎ করে শত্রুপক্ষের মর্টারের আঘাতে নূর মোহাম্মদের হাঁটু ভেঙে যায়। তবুও তিনি গুলি চালান। দেশ শক্রমুক্ত করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যান। একপর্যায়ে সম্মুখ যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন রণাঙ্গনের লড়াকু সৈনিক নূর মোহাম্মদ। যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ সরকার তাকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত করে।

আরএম/