জাসপ্রিত বুমরাহ বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আলোচিত বোলারের নাম। আবির্ভাবের পর থেকেই ভালো ক্রিকেট উপহার দিয়ে জয় করেছেন কোটি ক্রিকেটপ্রেমির হৃদয়, হয়েছেন ভারত জাতীয় দলের নিয়মিত একজন ক্রিকেটার। বুমরাহকে যখন পুরো বিশ্ব এক নামে চিনছে, তখন বেশ কষ্টের মধ্য দিয়ে দিনযাপন করছিলেন তারই দাদা (বাবার বাবা)। ভারতের উত্তরখণ্ডে অটোরিকশা চালিয়ে জীবনের চাকা ঘুরানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি।
এ নিয়ে মাস কয়েক আগে ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রচারের পর ক্রিকেট বিশ্বে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তবে তাতেও টনক নড়েনি বুমরার। শেষমেশ হয়েছে করুণ এক পরিণতি। বুমরাহর দাদা সান্তোক সিং বুমরাহর লাশ পাওয়া গেছে নদীতে। ধারণা করা হচ্ছে, নাতী বুমরাহর উপর অভিমান করে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
জানা গেছে, প্রিয় নাতীকে দেখতে গত কয়েকদিন আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আহমেদাবাদ আসেন সান্তোক। এরপর শুক্রবার থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে রোববার সবরমতী নদী থেকে স্থানীয় দমকল বাহিনী তার লাশ উদ্ধার করে। ভারতীয় গণমাধ্যমের ধারণা, নাতীর অবহেলায় আত্মহত্যা করতে পারেন সান্তোক।
২০০১ সালে জাসপ্রিত বুমরার বাবা জসবীর সিং বুমরাহ মারা গেলে তার পরিবারে নেমে আসে অন্ধকার ছায়া। পিতৃহারা ছেলের বয়স তখন মাত্র ৭ বছর। পরিবার চালানোর উদ্দেশ্যে নিজেদের ফ্যাক্টরি বিক্রি করে বুমরার দাদা সান্তোক সিং বুমরাহ তখন উত্তরখণ্ডে চলে যান এবং চারটি টেম্পো কিনেন। কিন্তু সেটি লাভজনক না হলে একসময় নিজেই অটোরিকশা চালান শুরু করেন। এবং এই কাজটি তিনি করে আসছিলেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
জাসপ্রিত বুমরাহর মা দলজিৎ একজন স্কুল-শিক্ষিকা। ক্রিকেটার হওয়ার পেছনে বুমরার মায়ের রয়েছে অনেক অবদান। বর্তমানে বুমরাহ আছেন তার মাকে নিয়েই।
২০১৪ সালে আইপিএলের দল মুম্বাই ইন্ডিয়ানস বুমরাহকে ১.২ কোটি রুপি দিয়ে কিনে নিলে বিশ্ব ক্রিকেটের নজর পড়ে তার উপর। ২০১৬ সালে ভারতের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। নাতী কোটিপতি হয়ে গেলেও ৮৪ বছর বয়সী বৃদ্ধ দাদার কোনো খোঁজই নিতেন না। এ নিয়ে প্রচণ্ড আক্ষেপ ছিল বুমরার দাদার। শেষমেশ অভিমান নিয়েই তিনি পাড়ি জমিয়েছেন ওপারে।
আজকের বাজার: সালি / ১১ ডিসেম্বর ২০১৭