রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশে রোববার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বেলারুশ প্রেসিডেন্ট আলেকজান্দার লুকাশেঙ্কো সপ্তম মেয়াদে অপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করবেন। মিনস্ক থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
ফলে, তার তিন দশকের কর্তৃত্ববাদী শাসনকাল আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বর্তমানে ৭০ বছর বয়সী লুকাশেঙ্কো ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হন। এরপর থেকেই তিনি বেলারুশে ক্ষমতায় আছেন।
২০২০ সালে বেলারুশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দেশব্যাপী বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। নির্বাচনে লুকাশেঙ্কোর জয়ের পর বেলারুশে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়। তিনি তার শাসনের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ দমন করেন।
২০২২ সালে মস্কোকে ইউক্রেন আক্রমণের জন্য বেলারুশের ভূখণ্ড ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়ার পর এটি হবে মিনস্কের প্রথম কোনও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।
বিরোধী দল এবং পশ্চিমারা লুকাশেঙ্কো ভোটে কারচুপি করেছেন বলে অভিযোগ করেন।
সরকার তীব্র দমন-পীড়ন চালায় এবং ১ হাজারেরও বেশি মানুষ এখনও কারাগারে আছেন এবং হাজার হাজার মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
শুক্রবার ভোটের আগে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে, লুকাশেঙ্কো ২০২০ সালের বিক্ষোভকে এটি যাতে আর না ঘটে সেজন্য তা প্রতিরোধের ‘একটি টিকার মতো’ বলে অভিহিত করেছেন।
লুকাশেঙ্কোর অনেক রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীই কারাগারে রয়েছেন, কেউ কেউ আবার দেশ থেকে নির্বাসিত রয়েছেন। এবারের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সপ্তমবারের মতো বেলারুশের শাসনভার নিতে যাচ্ছেন লুকাশেঙ্কো।
– বেলারুশিয়ানরা ‘কোন যুদ্ধের’ আশা করে না –
সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর বেলারুশে প্রথম জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করেন ৩৯ বছর বয়সী লুকাশেঙ্কো।
বেলারুশে এই শক্তিশালী ব্যক্তির সমালোচনা নিষিদ্ধ। মিনস্ক এবং অন্যান্য শহরে এএফপির সাথে কথা বলা বেশিরভাগ মানুষই তার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছিলেন।
লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী অন্যান্য প্রার্থীদের নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের আবহ তৈরি করা হয়েছে এবং খুব কম লোকই জানেন যে তারা কারা।
দক্ষিণ-পূর্ব বেলারুশের ছোট্ট গ্রাম গুবিচির ৪২ বছর বয়সী কৃষক আলেক্সি বলেন,”আমি লুকাশেঙ্কোকে ভোট দেব কারণ তিনি (১৯৯৪ সালে) প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
জাতিসংঘের ধারনা, ৯০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ২০২০ সাল থেকে বেলারুশিয়ান প্রায় ৩ লাখ লোক দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। তাদের বেশিরভাগই গেছে পোল্যান্ড এবং লিথুয়ানিয়ায়।
জানুয়ারির শুরুতে এএফপির সাথে এক সাক্ষাৎকারে নির্বাসিত বিরোধীদলীয় নেত্রী স্বেতলানা টিখানোভস্কায়া ভোটকে ’প্রহসন’ বলে নিন্দা করেছেন।
নির্বাচনের আগে, লুকাশেঙ্কো সরকার প্রায় ২শ’ রাজবন্দীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।
কিন্তু প্রাক্তন বন্দীরা এএফপির সাথে কথা বলে জানিয়েছে, মুক্তিপ্রাপ্তরা নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নজরদারিতে রয়েছে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে অক্ষম।
বেলারুশের কারাগারে বন্দীদের মধ্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আলেস বিলিয়াতস্কিও রয়েছেন।