বেসিক ব্যাংকের অনিয়ম পেয়েছে সিএজি

রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক  বেসিক ব্যাংকের ঋণ বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল বা সিএজি কার্যালয়।বেসিক ব্যাংকের ঋণ বিতরণে অনিয়মের ওপর সম্প্রতি সিএজির তৈরি করা বিশেষ অডিট প্রতিবেদনে এ মন্তব্য করা হয়েছে। প্রতিবেদনে লোক নিয়োগেও দুর্নীতির ব্যাপক প্রমাণ মিলেছে। প্রথমবারের মতো তৈরি করা সিএজির এই প্রতিবেদনে মোট ৫ হাজার ৩৯৯ কোটি  টাকার গুরুতর অনিয়ম উঠে এসেছে। এতে অবৈধ ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের ক্ষেত্রে ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুর সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে।

 প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  ব্যাংকটি যে প্রক্রিয়ায় ঋণ অনুমোদন দিয়েছে তা বাংলাদেশের ব্যাংকিং ইতিহাসে নজিরবিহীন। কোনো রকম বাছ-বিচার ছাড়াই স্বেচ্ছাচারীভাবে যাকে খুশি তাকে ঋণ দেয়া  এই জালিয়াতির পেছনে পরিচালনা পর্ষদের সম্পৃক্ততাসহ ২০টি কারণ চিহ্নিত করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ভুয়া গ্রাহক ও জামানতবিহীণ ঋণ প্রদান, পরিচালনা পর্ষদের পছন্দের গ্রাহককে নির্বিচারে ঋণ দেওয়া, ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে শাখা ও প্রধান কার্যালয়ের সুপারিশ আমলে না নেওয়া, অন্য ব্যাংকের খেলাপি গ্রাহককে ঋণ দেওয়া, সীমা উপেক্ষা করে মাত্রাতিরিক্ত ঋণ দেয়া ইত্যাদি।

বেসিক ব্যাংকের ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিতরণ করা ঋণের ওপর সিএজি কার্যালয় এই নিরীক্ষা প্রতিবেদন  তৈরি করেছে। সিএজির অধীন বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তর ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও সংশ্নিষ্ট শাখাগুলোতে সরেজমিন পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় নথি পর্যালোচনা করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। ২০১৪ সালের মার্চ থেকে একই বছরের আগস্ট পর্যন্ত অধিদপ্তরের একজন উপপরিচালকের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল নিরীক্ষা কার্যক্রম চালায়। গত মাসের শেষে এ প্রতিবেদনটি সিএজি কার্যালয়ে জমা দেয়া হয়। অনিয়মগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি ব্যাংকটির সমস্যাকবলিত অবস্থা থেকে উত্তরণে একগুচ্ছ সুপারিশ ও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব করা হয় প্রতিবেদনে।

তিনশ’ বিশ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে দুদর্শাগ্রস্ত ব্যাংকটির অবস্থা ভালো করতে ২১ দফা সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ভালো গ্রাহককে ঋণ দেওয়া, জামানত বিশ্নেষণ করে ঋণ মঞ্জুর করা, অন্য ব্যাংকের খেলাপি গ্রাহককে ঋণ না দেয়া, গ্রাহকের ব্যবসার চাহিদা কী তা বিবেচনা করে ঋণ দেয়া, ঋণ নবায়ন ও সুদ মওকুফ থেকে বিরত থাকা, ব্যয় কমানোর জন্য অপ্রয়োজনীয় জনবল ছাঁটাই করা ইত্যাদি।

আজকের বাজার:এসএস/আরআর/ ১১ডিসেম্বর ২০১৭