নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন ও এর সাফল্যে ব্যবসায়ীদের উপর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আস্থা রাখছে বলে জানিয়েছেন সংস্থটির চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
আজ ২০ মে শনিবার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের সম্মেলন কক্ষে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প আয়োজিত ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’ বাস্তবায়ন বিষয়ক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় দেশের গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও সংবাদকর্মীরা আলোচনায় অংশ নেন।
চেয়ারম্যান বলেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে আমাদের এখন হাই মোর্যাল গ্রাউন্ডে অবস্থান করতে হবে। এ আইনের সুবিধাকে যাতে কেউ অপব্যবহার করতে না পারে সেজন্য আমরা ব্যবসায়ীদের ওপর আস্থা রাখছি। ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন ও এর সাফল্যের ওপর এনবিআর পুরোপুরি আস্থা রাখছে। এনবিআর ব্যবসায়ীদের পার্টনার ঘোষণা করেছে। তারা হচ্ছেন ভ্যাট স্মার্ট ও ভ্যাট ট্রাস্টি। তাদের মাধ্যমে আমরা সঠিকভাবে ভ্যাট পাবো সেই প্রত্যাশা করছি।
তিনি আরও বলেন, এনবিআর উদ্ভাবনীর মাধ্যমে কাজ করছে। আইসিটি বিভাগের সহায়তায় একটি মোবাইল অ্যাপস তৈরি চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে ভ্যাট আইন নিয়ে কি হচ্ছে সারাদেশের মানুষ জানতে পারেন। কোথায় কোথায় ভ্যাটের লেনদেন হচ্ছে, তা সরকারের কোষাগারে আসছে কিনা তারও তথ্য জানতে পারেন। উদ্ভাবন নিয়ে এনবিআর এগিয়ে যাবে। একটি ইনোভেশন কম্পিটিশন আয়োজনের চিন্তা করছি। যদি স্বনামধন্য ব্যক্তি বা নবীন আইসিটি উদ্যোক্তাদের কাছে কোন উদ্ভাবন থাকে তা এনে বিচার বিশ্লেষণ করবো।
চেয়ারম্যান বলেন, সারাদেশে যেসব প্রতিষ্ঠান ভ্যাট নিবন্ধন নেবেন আমরা সেসব প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করবো। এসব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জনগণকে জানানো হবে। এতে জনগণ জানবে, প্রতিষ্ঠানগুলোও লাভবান হবে। যেসব সচেতন ব্যক্তি ভ্যাট দিতে চান তারা সেসব প্রতিষ্ঠানে গিয়ে লেনদেনের মাধ্যমে ভ্যাট দিতে পারবেন। তিনি বলেন, আমরা সবাই মিলে নতুন আইনের সার্বিক বিষয় বুঝলে কেউ এ আইনের সুযোগের অপব্যবহার করতে পারবে না। জনগণকে নতুন আইনের বিষয়ে তথ্য দিলে জনগণ সচেতন হবে।
চেয়ারম্যান বলেন, নতুন আইন নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে ‘ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন সহায়তা কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার, বিভাগীয় কর্মকর্তা, বিভিন্ন চেম্বারদের নিয়ে এ কমিটি করা হয়েছে। যাতে করে এ কমিটি জনগণকে সচেতন করে। এ কমিটির মাধ্যমে সারাদেশে নতুন আইন নিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম হবে। বিভাগীয় কমিটিতে প্রত্যেক জেলার জেলা প্রশাসক থাকবেন। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একই ধরণের কমিটি করা হয়েছে সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থাকবেন। সুতরাং উপজেলা পর্যায়ে প্রেসক্লাব, চেম্বার সকলে এরমধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবেন। একটি সচেতনতামূলক কার্যক্রমের একটি প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। তিনি আরো বলেন, নতুন আইনে ব্যবসায়ী ও জনগণকে সহায়তায় হেল্পডেস্ক করা হয়েছে। শুধু ভ্যাট বিভাগ নয় আয়কর বিভাগ, শুল্ক বিভাগে মাঠ পর্যায়সহ সকল জায়গায় হেল্পডেক্স হচ্ছে। সচেতনতা ও প্রচারের দিক প্রাধান্য পাচ্ছে।
এর আগে সকালে আলোচনা সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান বলেন, নতুন ভ্যাট আইন কোনভাবেই সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য ভ্যাটের বাইরে রাখা হয়েছে। ফলে বাজারে এগুলোর দাম বাড়বে না। এটি স্বচ্ছ, আধুনিক, ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি যোগাযোগবিহীন, সার্বক্ষণিক, সময়োপযোগী, সর্বোপরি দেশী-বিদেশী ব্যবসা বান্ধব ও চাহিদার উপযোগী।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন এনবিআর সদস্য (শুল্ক ও ভ্যাট প্রশাসন) ও ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প পরিচালক মো. রেজাউল হাসান। নতুন ভ্যাট আইনের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এনবিআর সদস্য (ভ্যাট নীতি) ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন। এছাড়া নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে উপস্থাপনা দেন ভ্যাট অনলাইন উপ পরিচালক মুহম্মদ জাকির হোসেন।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ২০ মে ২০১৭