সংসদে প্রশ্ন

ব্যাংকের মূলধন গেল কোথায়

জাতীয় পার্টিও প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন বাবলু সংসদে ব্যাংকের দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে এবং দায়ীদের বিচার নিশ্চিত করতে ব্যাংকিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে অর্থমন্ত্রীসহ সরকারের সব ব্যর্থ মন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়ে মানুষের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান তিনি।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল সংসদের ১৯তম অধিবেশনের সমাপনী দিনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এসব দাবি জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ উপস্থিত ছিলেন।

জিয়াউদ্দিন বাবুল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর টিম যদি শক্তিশালী না হয়, তাহলে সেটাকে নিয়ে তিনি লক্ষ্যস্থলে পৌঁছতে পারবেন না। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী সংসদে বলেছেন, সাতটি ব্যাংকের সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি। এই মূলধনটা গেল কোথায়? এই মূলধনটা কার টাকা? এই ব্যাংকগুলোয় তো ডিপোজিট টাকা দিয়ে মূলধন হয়। এই টাকা যে আপনি আবার দিচ্ছেন এগুলো করের টাকা দিয়ে দিচ্ছেন? যারা কর দেয়, তারা কি সেই ক্ষমতা আপনাকে দিয়েছে?

এ সময় জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব জানান, মূলধন ঘাটতির সরকারি ব্যাংকগুলো হলো সোনালী, রূপালী, জনতা, বেসিক ব্যাংক আর বেসরকারি ব্যাংকগুলো হলো কমার্স, ফারমার্স ও আইসিবি ব্যাংক। এদের আবার মূলধন দিয়ে লাভ কী? এই টাকা আপনি কোত্থেকে দেবেন? আপনি দেবেন করদাতার টাকা থেকে। এ দেশের ১৬ কোটি মানুষ কৃষক, শ্রমিক, রিকশাওয়ালার করের টাকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের সেই টাকা থেকে দেবেন। ব্যাংকগুলোকে এই করদাতার টাকা দিয়ে ভরণ-পোষণ করবেন। এর কি সাংবিধানিক কোনো অধিকার আপনাকে দেওয়া হয়েছে? আপনি কি মানুষের কাছ থেকে সেই অধিকার পেয়েছেন? এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যাংকগুলোর ঘাটতি পূরণ করেছেন আপনার মন্ত্রিত্বের মেয়াদে। আর ব্যাংকগুলো দুর্বল হচ্ছে বর্তমান এই অর্থমন্ত্রীর সময়।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি বলেছেন আপনাদের ব্যর্থতার কথা শুনতে চান। তাহলে কেউ যদি ব্যর্থ হন তাহলে আপনি কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না? ব্যর্থতার দায় নিয়ে কেন উনি এখানে থাকবেন? আমরা বার বার বলছি উনার চলে যাওয়া উচিত। উনি খালি ঘাটতির কথা বলেন, উন্নয়নের রঙিন চিত্র দেখান। মানুষ জানতে চায় এই ঘাটতি টাকা আমরা কোথা থেকে দেব? এর জবাব আমাদের কাছে নেই। মানুষের করের টাকা দেওয়ার অনুমতি কি আমরা পেয়েছি?