ব্রেক্সিটের পর ই-সেভেনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার হবে ব্রিটেনের

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে গেলে বাংলাদেশে ব্রিটেনের রফতানি বাণিজ্য বাড়তে পারে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমন আভাস পাওয়া গেছে। ‘জি সেভেন টু ই সেভেন: দ্য স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ট্রেড পারফরমেন্স ইনডেক্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামের মতো উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোতে ব্রেক্সিটের পর ৩০ কোটি ডলার রফতানির সুযোগ তৈরি হবে ব্রিটেনের।

বৃহস্পতিবার লন্ডনে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ-ব্রিটেন স্ট্র্যাটেজিকের দ্বিতীয় আলোচনায় বসার আগে এমন সব তথ্য সামনে এলো। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অংশ নেবেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক। ব্রিটেনের পক্ষে থাকবেন ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলেথ দফতরের স্থায়ী সহকারী মন্ত্রী স্যার সাইমন ম্যাকডোনাল্ড।

বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ ব্রিটেন। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা ব্রেক্সিটের পর ই-সেভেন দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার হবে ব্রিটেনের। গবেষণায় বলা হয়, ট্রেড ও কাস্টম ইউনিয়নের সদস্যরা ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে পারে। এটা বাইরেও আসতে পারে।

‘ন্যাশনাল পোস্ট-ব্রেক্সিট এক্সপোর্ট’ বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশে ব্রিটেন ২০ কোটি ডলারের রফতানি করে থাকে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে থাকলে এটি বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৮০ কোটিতে। তবে ইইউতে না থাকলে এটি বেড়ে দাঁড়াবে ১১০ কোটিতে। অর্থাৎ রফতানি বেড়ে যাবে ৩০ কোটি ডলার।

২০২৪ সালের মধ্যে নিম্ন আয়ের দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া ও ব্রেক্সিট ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে এই বৈঠকে। গত বছরের এপ্রিলে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের আলোচনায় প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানোর ব্যাপারে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করা হয়।

বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ ব্রিটেন। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা ব্রেক্সিটের পর ই-সেভেন দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার হবে ব্রিটেনের। গবেষণায় বলা হয়, ট্রেড ও কাস্টম ইউনিয়নের সদস্যরা ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে পারে। এটা বাইরেও আসতে পারে।

ই-সেভেন দেশগুলোতে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠীর বসবাস। নতুন গবেষণায় দাবি করা হয়, বর্তমানের চেয়ে এই দেশগুলোতে ৪৩ শতাংশ বেশি রফতানি করতে পারবে ব্রিটেন।

এদিকে বাংলাদেশ-কানাডা বাণিজ্যিক সম্পর্ককে অন্যান্য জি-সেভেন দেশগুলোর তুলনায় সফল বলা হচ্ছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কানাডার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক শক্তিশালী। বাংলাদেশ কানাডীয় পণ্য আমদানি গত পাঁচ বছরে অনেক বাড়িয়েছে। এটি ই-সেভেন দেশগুলোর জন্য উদাহরণ হতে পারে। ’বাংলাদেশ-কানাডা ৬৫ কোটি ডলারের ব্যবসা করে, যা পূর্বাভাসের চেয়ে ৮০ শতাংশ বেশি।

অক্সফোর্ড অ্যানালাইটিকার সহযোগিতায় তৈরি এই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ইনডেক্সে বলা হয়, জি-সেভেন দেশগুলোর ই-সেভেনভুক্ত দেশগুলোতে রফতানি হার প্রত্যাশার চেয়ে কম। তাদের দক্ষতা থেকে ১৬২ বিলিয়ন ডলার কম রফতানি করছে তারা। জি-সেভেন ও ই-সেভেন দেশগুলোর প্রবৃদ্ধিতে ৩০ শতাংশ প্রভাব রাখছে এই বিষয়টি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ই-সেভেন দেশগুলো ২০১৮ সালে জি-সেভেন দেশগুলোর প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।এক্ষেত্রে জার্মানি সফল। তারা ই-সেভেন দেশগুলোর সঙ্গে ১০৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে। যা প্রত্যাশার চেয়ে দ্বিগুণ।

ট্রেড ফর ইউরোপ অ্যান্ড আমেরিকাজ অ্যাট স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর প্রধান মাইকেল ভ্রনতামিতস বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে জি-সেভেন দেশগুলোর জন্য বিলিয়ন ডলারের ব্যবসার সুযোগ আনছে ই-সেভেন দেশগুলো। প্রতিষ্ঠানগুলোর এখন পর্যালোচনা করা উচিত কিভাবে এই সুযোগ কাজে লাগানো যায়।’

এমআর/