বড় জয়ে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে বাংলাদেশ

এসিসি যুব এশিয়া কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ২৬২ রানের বড় জয় পেয়েছে সাইফ হাসানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ অনুর্ধ ১৯ ক্রিকেট দল। দাপুটে এই জয়ের ফলে ভারতকে পেছনে ফেলে গ্রুপ ‘এ’ এর পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থানে ওঠে এসেছে সাইফ-আফিফরা।

কুয়ালালামপুরে টস ভাগ্যে হেরে আগে ব্যাট করার আমন্ত্রণ পেয়ে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে অধিনায়ক সাইফ হাসানের ৯০ ও তৌহিদ রিদয়ের ১২০ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৩৫ রানের রান পাহাড় দাঁড় করায় বাংলাদেশের যুবারা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৭৩ রান করতে সক্ষম হয় স্বাগতিক মালয়েশিয়া।
স্বাগতিকদের পক্ষে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নামা অধিনায়ক ভিরেন্দীপ সিং ১২৮ বল মোকাবেলায় সর্বোচ্চ ৩৮ রান সংগ্রহ করেন। এই ব্যাটসম্যান ছাড়া মালয়েশিয়ার আর কোন ব্যাটসম্যানই নিজেদের সংগ্রহটা দুই অংকের ঘরে নিতে সক্ষম হননি। যার ফলে বাংলাদেশি বোলারদের সামনে কোন রকম প্রতিরোধ না গড়েই পরাজয় মেনে নিতে হয় স্বাগতিকদের।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে শাখায়াত হোসেন ১০ ওভার বল করে ৪ মেডেনসহ মোট ১৮ রান খরচ করে ৪ উইকেট শিকার করেন। একমাত্র বোলার হিসেবে আফিফ হোসেন কোন মেডেন ওভারের দেখা না পেলেও ১৯ রানের বিনিময়ে তুলে নেন ২ উইকেটে। এছাড়া সাইফ হাসান ও রনি হোসেন প্রত্যেকে নিজেদের ঝুঁলিতে একটি করে উইকেট নেন। এই ম্যাচে কোন উইকেটের দেখা না পেলেও বাংলাদেশি যুবাদের মধ্যে সবচেয়ে আলো ছড়ান নাইম হাসান। ১০ ওভারের স্পেলের মধ্যে সাত ওভারেই কোন রান খরচ করেননি তিনি। তাছাড়া সাইফ হাসানও ৯ ওভার বল করে ৯ রান দেওয়ার পাশাপাশি তুলে নেন ৫টি মেডেন ওভার।
এর আগে মালেয়েশিয়ার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে আগে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের সাত ওভারের মধ্যে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান নাইম শেখ (১৩) ও পিনাক ঘোষকে (১২) হারায় বাংলাদেশ।
দলের বিপর্যয় রুখতে এরপর ক্রিজে যোগ দেন অধিনায়ক সাইফ হাসান ও তৌহিদ। এই দুই ব্যাটসম্যানের দৃঢ়তায় প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিয়ে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় টাইগাররা। ত্তৃীয় উইকেট জুটিতে ১৯২ রান যোগ করার পথে উভয় ব্যাটসম্যান তুলে নেন আসরের প্রথম অর্ধশতকের ইনিংস। সেঞ্চুরির পথে হাঁটতে থাকা সাইফকে ইনিংসের ৪২তম ওভারের সময় হাফিজ ফেরালে বিচ্ছিন্ন হয় এই উইকেট জুটি।


সাইফ ৯০ রান করে আউট হয়ে শতক হাতছাড়া করলেও আক্ষেপ বাড়তে না দিয়ে শতক পূর্ণ করেন তৌহিদ। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত থাকতে না পারলেও হাফিজের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে দলকে নিরাপদ সংগ্রহে নিয়ে যেতে ১২০ বলে ১২০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন এই ব্যাটসম্যান। দুই থিতু হওয়া ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর আফিফ হোসেনের ৯ বলের ঝড়ো ২১ রানের ইনিংসের সাথে মাহিদুল ইসলামের ৯ বলের অপরাজিত ১৬ ও আমিনুল ইসলামের ১৭ বলের ৩৯ রানের টর্নেডো ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৩৫ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
স্বাগতিক বোলারদের মধ্যে ৯ ওভার বল করে ৭৮ রান খরচায় ৪ উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ হাফিজ আর ৯৬ রানের বিনিময়ে সৈয়দ আজিজ নেন দুটি উইকেট।
প্রসঙ্গত, এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর শেষ ওভারে দুই উইকেটের জয় পায় সাইফ হাসানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ অ.১৯ দল। উল্লেখ্য গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে মঙ্গলবার ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড-
বাংলাদেশ অ.১৯ দলঃ ৩৩৫/৬ (৫০ ওভার)
তৌহিদঃ ১২০, সাইফ ৯০, আমিনুল ৩৯*, আফিফ ২১, মাহিদুল ১৬; হাফিজ ৭৮/৪
মালয়েশিয়া অ.১৯ দলঃ ৭৩/৮ (৫০ ওভার)
ভীরেন্দীপ ৪৬; শাখাওয়াত ১৮/৪, আফিফ ১৯/২
ফলাফলঃ বাংলাদেশ ২৬২ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরাঃ তৌহিদ রিদয় (১২০ রান)
আজকের বাজার: সালি / ১৩ নভেম্বর ২০১৭