ভাই-ভাবিসহ চারজনকে হত্যা: সেই রায়হানুরের ফাঁসি

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে হত্যা মামলার একমাত্র আসামি রায়হানুর রহমানকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

বিচার বিভাগের ইতিহাসে সাতক্ষীরায় এ প্রথম কোনো হত্যা মামলায় মাত্র ২০ কার্য দিবসে রায় ঘোষিত হলো বলে জানিয়েছেন আদালতের পিপি আব্দুল লতিফ। দণ্ডিত রায়হানুর রহমান কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিষা গ্রামের শাহজাহান ডাক্তারের ছোট ছেলে। নিহতরা হলেন- তার বড় ভাই শাহীনুর রহমান, ভাবি সাবিনা খাতুন, তাদের ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী ও মেয়ে তাসমিন সুলতানা।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বেকারত্বের কারণে বড় ভাই শাহীনুরের সংসারে খাওয়া-দাওয়া করতেন রায়হানুর। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোনো কাজ না করায় গত বছরের ১০ জানুয়ারি তাকে তালাক দেন স্ত্রী। সংসারে টাকা দিতে না পারায় দেবরকে মাঝে মধ্যেই গালমন্দ করতেন শাহীনুরের স্ত্রী সাবিনা। এরই জেরে গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাতে পানির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ভাই-ভাবি, ভাতিজা ও ভাতিজাকে খাওয়ান রায়হানুর।

এরপর ভোরে হাত-পা বেঁধে তাদের একে একে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেন। এ সময় তাদের চার মাসের শিশু মারিয়াকে না মেরে লাশের পাশে ফেলে রেখে যান তিনি। এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত শাহীনুরের শাশুড়ি কলারোয়া উপজেলার উফাপুর গ্রামের রাশেদ গাজীর স্ত্রী ময়না খাতুন।

মামলার তদন্তে নেমে শাহীনুরের ভাই রায়হানুর রহমান, একই গ্রামের রাজ্জাক দালাল, আব্দুল মালেক ও ধানঘরা গ্রামের আসাদুল সরদারকে গ্রেফতার করে সিআইডি। ২১ অক্টোবর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বিলাস মণ্ডলের আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন রায়হানুর।

এরপর একই বছরের ২৪ নভেম্বর রায়হানুরের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম। এ মামলায় ১৪ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। নিহত পরিবারে বেঁচে থাকা একমাত্র শিশু মারিয়া বর্তমানে হেলাতলা ইউপি সদস্য নাছিমা খাতুনের কাছে বড় হচ্ছে। তথ্য-ডেইলি বাংলাদেশ

আজকের বাজার/আখনূর রহমান