ভারত উচ্চ শুল্কের একটি দেশ বলে অভিযোগ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার এ অভিযোগের পাশাপাশি ভারতীয় পণ্যে একটি পারস্পরিক কর বা অন্তত এ ধরনের কোনো কর আরোপ করতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি।
ওয়াশিংটন ডিসির মেরিল্যান্ডে কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্সে (সিপিএসি) ট্রাম্প বলেন, ভারত অত্যন্ত উচ্চ শুল্কের একটি দেশ। তারা আমাদের ওপর অনেক বেশি শুল্ক আরোপ করছে। সম্মেলনে ২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বক্তব্য রাখাকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্থানীয়, বৈশ্বিক ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মতো বিস্তৃত পরিধির ইস্যু নিয়ে কথা বলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট শুল্কারোপের আলোচনায় প্রায়ই আইকনিক হার্লে-ডেভিডসন মোটরসাইকেলের উদাহরণ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমরা যখন ভারতে মোটরসাইকেল পাঠাই, তখন তারা এর ওপর শতভাগ শুল্ক আরোপ করে। আর ভারত যখন আমাদের কাছে মোটরসাইকেল পাঠায়, তখনো তারা শতভাগ অর্থ দাবি করে, কিন্তু এর বিপরীতে আমরা তাদের কাছে কোনো অর্থই দাবি করি না। এ কারণে তিনি একটি পারস্পরিক কর বা এমন একটি কর আরোপ করতে চান, যা হবে মিরর ট্যাক্স, কিন্তু পারস্পরিক।
চলতি বছরের শুরুতে পারস্পরিক কর প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউজের একটি অনুষ্ঠানে ট্রাম্প আইকনিক হার্লে-ডেভিডসন মোটরসাইকেল আমদানির শুল্ক শতভাগ থেকে ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনতে ভারতের সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা যথেষ্ট না হলেও ঠিক আছে।
২৪ জানুয়ারি হোয়াইট হাউজে উপস্থিত সাংবাদিকদের মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, মোটরসাইকেলের বিষয়টি উদাহরণ হিসেবে দেখা যেতে পারে। ভারতে এর আমদানি শুল্ক ছিল ১০০ ভাগ। কিন্তু মাত্র ২ মিনিটের আলোচনায় আমি তাদের এ হার ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনতে বাধ্য করেছি। যদিও এখন পর্যন্ত অনুপাত ৫০ শতাংশ বনাম ২ দশমিক ৪ শতাংশ (যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত মোটরসাইকেলের ওপর আরোপিত শুল্কহার) রয়ে গেছে। তার পরও এটা অত্যন্ত ন্যায্য একটি সমঝোতা।
শনিবারও অন্য দেশগুলোর মার্কিন পণ্যে উচ্চ কর আরোপ নিয়ে কথা বলার সময় ভারতের উদাহরণ ব্যবহার করেন ট্রাম্প। একই সঙ্গে তিনি জানান, এখন যুক্তরাষ্ট্রের একটি পারস্পরিক কর আরোপ করার সময়।
এদিকে ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করতে যাচ্ছেন বলে ট্রাম্প শনিবার জানান। তবে সিনেট তার পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সমর্থকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, অন্যরা আমাদের যেসব পণ্যের ওপর শতভাগ শুল্ক আরোপ করছে, আমি তাদের একই পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করতে চাই, যা শতভাগই হওয়া উচিত ছিল। এ সময় আইনপ্রণেতাদের প্রতিক্রিয়ার অনুকরণ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটা কোনো মুক্ত বাণিজ্য নয়। এসব বিরোধিতা কোত্থেকে আসছে—এ প্রশ্ন তুলে ট্রাম্প সমর্থক ও ভোটারদের সহায়তা চান।
ট্রাম্প আরো বলেন, তারা আমাদের শ্রদ্ধা করে না, আমাদের বোকা ভাবে। কিন্তু আমি আপনাদের বলতে চাই, বিশ্ব আবারো আমাদের দেশকে শ্রদ্ধা করবে। অন্যান্য দেশ যেখানে দুর্বল হচ্ছে, আমেরিকা সেখানে অতীতের চেয়েও দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। সুত্র- বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
আজকের বাজার/এমএইচ