ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে ইংল্যান্ড, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান

জশ বাটলার ও অ্যালেক্স হেলসের রেকর্ড উদ্বোধনী জুটিতে তৃতীয়বারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলো ইংল্যান্ড।
আজ বিশ^কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে ভারতকে।  ফাইনালে  যাওয়ার ম্যাচে  ১৬৯ রানের লক্ষ্য পায় ইংল্যান্ড।  হিন্তু বাটলার-হেলস জুটিতে ১৭০ রান তুলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে যেকোন উইকেটে সর্বোচ্চ রানের বিশ্ব রেকর্ড দলকে ফাইনালে  পৌঁছে দেন।  বাটলার ৮০ ও হেলস ৮৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
এই হারে দ্বিতীয়বারের মত বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিলো ভারত। এর আগে দু’বার, ২০১০ ও ২০১৬ সালে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিলো ইংলিশরা। ২০১০ সালে প্রথম ও সর্বশেষ বিশ্বকাপ জিতেছিলো ইংল্যান্ড।
অ্যাডিলেডে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জশ বাটলার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দারুন এক ডেলিভারিতে ভারতের লোকেশ রাহুলকে ৫ রানে বিদায় করেন পেসার ক্রিস ওকস।
শুরুতে রাহুলকে হারানোর পর পাওয়ার-প্লের সুবিধা নিতে পারেনি ভারত। অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে ব্যাট হাতে চড়াও হতে দেননি ইংল্যান্ডের বোলাররা। ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৩৮ রান পায় ভারত।
নবম ওভারে ক্রিস জর্ডানের বলে বিদায় নেন  ধীর গতিতে খেলে ৪টি চারে ২৮ বলে ২৭ রান করা রোহিত । রোহিত-কোহলি দ্বিতীয় উইকেটে ৪৩ বলে ৪৭ রান যোগ করেন।
চার নম্বরে নেমে ১টি করে চার-ছক্কায় দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেও ১৪ রানে থামেন সূর্যকুমার যাদব।
১২তম ওভারে দলীয় ৭৫ রানে ৩ উইকেট পতনের পর ক্রিজে কোহলির সঙ্গীন হন হার্ডিদ পান্ডিয়া। এই জুটিতে ১৫তম ওভারে ভারত শত রানে পৌঁছে।  ওভারে টি-টোয়েন্টিতে ৩৭তম ও এবারের বিশ^কাপে চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করে জর্ডানের বলে আউট হন কোহলি। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪০ বলে ৫০ রান করেন কোহলি। এই ইনিংস খেলার পথে আন্তর্জাতিক  টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথম ব্যাটার হিসেবে চার হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ  করেন ভারতীয় দলের সাবেক এ  অধিনায়ক।
কোহলি ফিরলেও ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন পান্ডিয়া। ২৯ বল খেলে টি-টোয়েন্টিতে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি করেন তিনি। পান্ডিয়া ঝড়ে শেষ ৫ ওভারে ৬৮ রান পায় ভারত। এতে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৮ রানের লড়াকু সংগ্রহ দাড় করায় টিম ইন্ডিয়া। ৪টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৩৩ বলে ৬৩ রান করেন পান্ডিয়া। ইংল্যান্ডের জর্ডান ৪৩ রানে ৩ উইকেট নেন।
১৬৯ রানের টার্গেটকে সহজ করে তোলেন  ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার বাটলার ও অ্যালেক্স হেলস। ৬ ওভারে ৬৩ রান তুলেন তারা। ২৮ বল খেলে টি-টোয়েন্টিতে ১২তম এবং এবারের বিশ্বকাপে দ্বিতীয়  হাফ-সেঞ্চুরি করেন হেলস।
১১তম ওভারে হেলসের ছক্কায় ইংল্যান্ডের রান ১শ স্পর্শ করে। ১৩তম ওভারে ১৯তম অর্ধশতকের দেখা পান বাটলার। ১২তম ওভারে ১৫ ও ১৩তম ওভারে ১৭ রান তুলে ম্যাচ হাতে মুঠোয় নিয়ে বাটলার ও হেলস। এমন অবস্থায় শেষ ৪২ বলে ২৯ রান দরকার পড়ে ইংল্যান্ডের।
মোহাম্মদ সামির করা ১৪তম ওভারের শেষ বলে আকাশে বল তুলে দিয়েও সূর্যকুমারের ব্যর্থতায়  ক্যাচ আউট থেকে রক্ষা পান বাটলার।
১৬তম ওভারের শেষ বলে ছক্কায় ইংল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করেন বাটলার। ১৬ ওভারে বিনা উইকেটে ১৭০ রান তুলে ফাইনালের টিকিট পায় ইংলিশরা।
১৭০ রান তুলে ইংল্যান্ডের পক্ষে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছেন বাটলার ও হেলস। যেকোন উইকেটে এই জুটির রান দ্বিতীয়স্থানে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসেও যেকোন উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ১৭০ রানের এই জুটি বিশ^রেকর্ড গড়েছে। আগেরটি ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্টন ডি কক ও রিলি রুশোর। এই বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় উইকেটে ১৬৮ রান করেছিলেন ডি কক-রুশো।
৪৯ বল খেলে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কায় অপরাজিত ৮০ রান করেন বাটলার। ৪৭ বলে ৮৬ রান তুলে অপরাজিত থাকেন হেলস। ৪টি চার ও ৭টি ছক্কায় নিজের বিধ্বংসী ইনিংসটি সাজান হেলস।
আগামী ১৩ নভেম্বর মেলবোর্নে পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনাল খেলতে নামবে ইংল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর কার্ড : (টস-ইংল্যান্ড)
ভারত : ১৬৮/৬, ২০ ওভার (পান্ডিয়া ৬৩, কোহলি ৫০, জর্ডান ৩/৪৩)।
ইংল্যান্ড : ১৭০/০, ১৬ ওভার (হেলস ৮৬*, বাটলার ৮০*)।
ফল : ইংল্যান্ড ১০ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : অ্যালেক্স হেলস (ইংল্যান্ড)।