বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে কিছু প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য যায় ভারতে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কের উন্নয়নে আরও ২১টি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য ভারতে রপ্তানির সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ।
৮ জুলাই শনিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এক ব্যবসায়িক সম্মেলনে এ কথা জানান, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা। ‘কৃষি, হর্টিকালচার ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যশিল্পখাতের ওপর এই ব্যবসায়িক সম্মেলনের আয়োজন করেছে ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স।
হর্ষবর্ধন শ্রীংলা বলেন, সাধারণত আন্তর্জাতিক কোনো প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি না থাকলে খাদ্যপণ্য আমদানি করে না ভারত। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক সুসস্পর্ক থাকায় সরাসরি ভারতে ২১টি খাদ্যপণ্য রপ্তানির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, বাংলাদেশে শিল্পায়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০০টি ইকোনোমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। ভারতের উদ্যোক্তারা চাইলে তাদের জন্যও বিশেষায়িত শিল্পাঞ্চল বরাদ্দ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিরাজমান স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতীয় শিল্প উদ্যোক্তারা নিশ্চিন্তে বিনিয়োগ করতে পারেন। ফলে বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ বাড়বে। পাশাপাশি বাংলাদেশে বিনিয়োগকৃত শিল্প কারখানায় উৎপাদিত পণ্য ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পুনঃরপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে। এতে দুই দেশের উদ্যোক্তা ও জনগণ লাভবান হবেন। এটি আমাদের দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি কমাতেও ইতিবাচক অবদান রাখবে। পাশাপাশি রপ্তানি বৈচিত্রকরণের নতুন সুযোগ তৈরি করবে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পাশে থাকা পরীক্ষিত বন্ধু ভারত। সে দেশের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসলে আমরা সব ধরনের সহায়তা দেব। বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে যৌথ বিনিয়োগ করতে পারেন। এক্ষেত্রেও আমাদের সরকার উদার নীতি গ্রহণ করবে।
আমির হোসেন আমু বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিশাল সুযোগ রয়েছে। এই অঞ্চলে বাংলাদেশি ইট, সিমেন্ট, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং খাদ্য পণ্য, কৃষিভিত্তিক পণ্য, মাছ, মেলামাইন, সিরামিক, প্রসাধনী ও কসমেটিক্স এবং সিআই শিট, হালকা প্রকৌশল পণ্য ইত্যাদির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়া সবজি, মশলা, ফল-মূল ইত্যাদি রপ্তানির অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে দেশের চাহিদা মিটিয়ে সেগুলো ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, প্রক্রিতাজাত খাদ্যপণ্যের উন্নয়নে আমরা দিয়েছে। ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা চাইলে এই খাতে বিনিয়োগ করতে পারে।
অনুষ্ঠানে ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাসকিন আহমেদ, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদসহ দুই দেশের ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় ভারত-বাংলাদেশের দুই দিন ব্যাপী ক্রেতা-বিক্রেতা মিলনমেলার উদ্বোধন করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। আজ ও আগামীকাল রোববার প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই মেলা চলবে।
আজকের বাজার: এলকে/এলকে ৮ জুলাই ২০১৭