ভুয়া ওয়ারেন্ট ইস্যুকারী খুঁজতে সিআইডির কমিটি গঠন

ভুয়া ওয়ারেন্ট কোথা থেকে ইস্যু হয় এবং কারা ইস্যু করে তা খুঁজে বের করতে চার কর্মকর্তার নেতৃত্বে কমিটি গঠন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিনিয়র পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞার নেতৃত্বাধীন কমিটির অপর সদস্যরা হলেন- অতিরিক্ত এস এস পি ফারুক আহমেদ, সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. রেজাউল হক ও পুলিশ পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান। মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে কমিটি গঠন সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

অ্যাডিশনাল ডিআইজি খোন্দকার রফিকুল ইসলামের স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনটি দাখিল করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। আদালত এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত। এর আগে, গত ১০ ডিসেম্বর ভুয়া ওয়ারেন্ট কোথায় থেকে ইস্যু হয় এবং কারা ইস্যু করে তা খুঁজে করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত।

জানা যায়, গত ৩০ অক্টোবর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কৃষি বিভাগের প্রোগ্রাম অফিসার মো. আওলাদ হোসেনকে আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেদিন আওলাদকে ঢাকার আদালতে হাজির করা হলে তার জামিন আবেদন করা হয়। আদালত তার নথিপত্র কক্সবাজারের আদালতে পাঠানোর আদেশ দেয়। এ নথিপত্র কক্সবাজারের আদালতে পৌঁছার পর আওলাদের জামিন আবেদন করা হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ নভেম্বর কক্সবাজার আদালত জানায়, ওই মামলায় আওলাদ নামে কোনো আসামি নেই। গ্রেপ্তারি পরোয়ানাটি এই আদালত থেকে ইস্যু হয়নি। ওই পরোয়ানা সৃজন করা হয়েছে। তাকে মুক্তি দেওয়া হোক। এরপর মুক্তিনামাটা যখন ঢাকা জেলখানায় পৌঁছায় তখন ঢাকা কারাগার জানায় তার বিরুদ্ধে রাজশাহীর একটি মামলা রয়েছে এবং তাকে রাজশাহী পাঠানো হবে। রাজশাহী কোর্টে যখন তার জামিন চাওয়া হয় তখন রাজশাহী কোর্ট জানায় এই নামে কোনো আসামি নেই এ মামলায়। তখন তাকে মুক্তি দেওয়ার আদেশের পর কারাগার থেকে জানানো হয় তার বিরুদ্ধে বাগেরহাটে আরও একটি মামলা আছে। সেখানে তাকে পাঠানো হবে।

এরপর গত ১ ডিসেম্বর বাগেরহাট আদালতে জামিন চাইলে আদালত জানায় আওলাদ হোসেন নামে এ মামলায় কোনো আসামি নেই এবং তার নামে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এখান থেকে জারি করা হয়নি। ওইদিন বাগেরহাটের আদালত তাকে মুক্তির নির্দেশ দেয়। এ আদেশের পর তার বিরুদ্ধে আবার শেরপুরে একটা মামলায় ওয়ারেন্টের বিষয়ে জানানো হয়। এমন করে একাধিক জেলা ঘুরে এখন তিনি শেরপুর কারাগারে আছেন। পরে বিষয়টি নিয়ে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন তার স্ত্রী।

এ রিটের প্রাথমিক শুনানি করে গত ১০ ডিসেম্বর হাইকোর্টেও একটি বেঞ্চ ভুয়া ওয়ারেন্ট কোথা থেকে ইস্যু হয় এবং এর সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কৃষি বিভাগের প্রোগ্রাম অফিসার মো. আওলাদ হোসেনের বিরুদ্ধে জারি করা ওয়ারেন্ট ভুয়া কি না, তা যাচাই করে তাকে জামিনে মুক্তি দিতে শেরপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার কমিটি গঠনের কথা হাইকোর্টকে জানায় সিআইডি। সূত্র-ইউএনবি

আজকের বাজার/আখনূর রহমান