ভোলার ভেদুরিয়ায় পরীক্ষামূলক গ্যাস উত্তোলন শুরু

দ্বীপ জেলা ভোলার একটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাস তোলা শুরু হয়েছে। শনিবার ২৭ জানুযারি দুপুর সোয়া একটার দিকে এই উত্তোলন কাজ শুরু করেছে রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস কোম্পানি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। এটি হবে দেশের ২৭ তম গ্যাসক্ষেত্র।
ভোলা গ্যাসক্ষেত্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান আজকের বাজারকে জানান, মাটির নিচে ৩৩৪৮ ফুট থেকে ৩৩৫২ ফুট এই স্তরে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। এমন আরও ৫ টা জোন আছে সেখানে।
তিনি জানান, সেখানে ঠিক কী পরিমান গ্যাস রয়েছে এবং বাণিজ্যিকভাবে কতটুকু উত্তোলনযোগ্য, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে আরও পরীা-নিরীা করতে হবে।
গত ৯ই ডিসেম্বর ভোলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের মাঝিরহাটে ভোলা উত্তর-১ নামে গ্যাসেেত্রর খননকাজ শুরু করে বাপেক্স। চলতি মাসের ১৫ জানুয়ারি গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার কথা জানানো হয় আনুষ্ঠানিকভাবে।
ওইদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভোলায় মোট মজুদ গ্যাসের পরিমান ১ হাজার ৫০০ বিলিয়ন ঘনফুট। সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র করে এই গ্যাস ব্যবহার করা যায়। প্রয়োজনে পাইপলাইনের মাধ্যমে ওই গ্যাস জাতীয় গ্রিডে আনা হবে।
গত বছর নভেম্বরে ভোলার বিদ্যমান শাহবাজপুর গ্যাসেেত্রর শাহবাজপুর পূর্ব-১ নামে একটি কূপে গ্যাসের সন্ধান পায় বাপেক্স। গত নভেম্বর থেকে এ কূপ থেকে পরীামূলক গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। এ কূপ থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে ভেদুরিয়ায় নতুন কূপ খননের কাজ শুরু হয় গত ডিসেম্বরে।
বাপেক্স সূত্র জানায়, গত ডিসেম্বরে ভোলা উত্তর-১ কূপের খনন শুরুর পর চলতি মাসের প্রথমদিকে তিন হাজার ২৩৬ থেকে তিন হাজার ২৪৫ মিটার গভীরতায় একটি ৯ মিটারের বালিস্তর পাওয়া যায়। এর পর তিন হাজার ২৬০ থেকে তিন হাজার ২৮৫ মিটার গভীরতায় আরেকটি বালিস্তর পাওয়া যায়। এখানেই গ্যাস পাওয়া গেছে। এ কূপটি তিন হাজার ৪৫০ মিটার পর্যন্ত খননের কথা রয়েছে।
ভোলায় গ্যাসত্রে আবিস্কারের জন্য ১৯৮৬ সালে প্রথম ভূ-কম্পন জরিপ চালানো হয়। প্রথম অনুসন্ধান কূপ খনন করা হয় ১৯৯৪ সালে শাহবাজপুরে। এর পর আরও তিনটি কূপ খনন করা হয়েছে। ২০০৯ সালের ১১ মে থেকে এই ত্রে থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু করে বাপেক্স। সেখানে থাকা চারটি কূপের মধ্যে তিনটি থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) গ্যাস তোলা হচ্ছে। ২০১৬ সালে এই এলাকায় আবার ত্রিমাত্রিক জরিপ চালায় বাপেক্স। শাহবাজপুর ত্রে থেকে বর্তমানে ভোলায় দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে (২২৫ ও ৩৫ মেগাওয়াট) গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া স্থানীয় শিল্প গ্রাহকদেরও গ্যাস দেওয়া হচ্ছে।