ভোলার নতুন কুপে ৬০০ বিসিএফ গ্যাসের সম্ভাবনা

ভোলার ভেদুরিয়ায় নতুন একটি অনুসন্ধান কুপে ৬০০ বিসিএফ (বিলিয়ন ঘনফুট) গ্যাস পাওয়ার আশা জেগেছে। এই কুপে গ্যাস থাকার বিষয় নিশ্চিত করেছে রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস কোম্পানি-বাপেক্স। তবে স্পষ্ট চিত্র পেতে আরও কিছু পরীক্ষা তাদের করতে হবে।

সোমবার ১৫ জানুয়ারি নতুন এই গ্যাসক্ষেত্রের সম্ভাবনা নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকেও আলোচনা হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গ্যাস জমে যাচ্ছে বলে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এজন্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তিনি বলেন, ভোলার এই গ্যাস বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস ব্যবহার করাটা সুবিধার। পাইপে আনা অনেক খরচের বিষয়। তবুও পুরো মজুদ নিশ্চিত হয়ে এ বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বৈঠকে মন্ত্রিসভার সদস্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, নতুন ওই ক্ষেত্রে ৬০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যেতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে আশা করা হচ্ছে। এটি হবে দেশের ২৭তম গ্যাসক্ষেত্র। সেখানে খনন করা হলে আরও গ্যাস পাওয়া যাবে বলে সরকার আশা করছে।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভোলায় গ্যাসের সন্ধানে আরও কূপ খননের ওপর গুরুত্ব দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দ্বীপ উপজেলা ভোলায় বিদ্যুৎকেন্দ্র করে সেখানে এই গ্যাস ব্যবহার করা যায়। প্রয়োজনে পাইপলাইনের মাধ্যমেও ওই গ্যাস জাতীয় গ্রিডে নিয়ে আসা যায়।
গত ৯ই ডিসেম্বর ভোলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের মাঝিরহাটে ভোলা উত্তর-১ নামে গ্যাসক্ষেত্রের খননকাজ শুরু করে বাপেক্স। কর্মকর্তা বলছেন, প্রাথমিক পরীক্ষায় ওই কূপে গ্যাস আছে বলেই তাদের মনে হচ্ছে।

ভোলায় প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায় শাহবাজপুর ক্ষেত্রে। সেখানে ২০০৯ সালের ১১ মে উত্তোলন শুরু করে বাপেক্স। শাহবাজাপুরে ৩৫ বিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে বাপেক্সের প্রকৌশলীদের ধারণা। সেখানে থাকা চারটি কূপের মধ্যে তিনটি থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস তোলা হচ্ছে।

গত বছরের অক্টোবরে ওই গ্যাসক্ষেত্রের পাশেই নতুন আরেকটি গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া যায়, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘শাহবাজপুর ইস্ট-১’। এই ক্ষেত্রে ৭২০ বিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাসের মজুদ রয়েছে বলে বাপেক্সের কর্মকর্তাদের ধারণা। নভেম্বরে ওই কূপ থেকে পরীক্ষামূলক উত্তোলনও শুরু হয়েছে।

বাপেক্স জানিয়েছে, ২০১৬ সালের পহেলা জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের পুরনো ২৬টি গ্যাস ক্ষেত্রে প্রমানিত গ্যাসের মজুদ ছিল ১৩ দশমিক ৬০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট।

গ্যাস সঙ্কটের মধ্যে গত কয়েকবছরে নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে উত্তোলন বাড়িয়ে দৈনিক ২ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুটে নিতে পেরেছে সরকার। কিন্তু সারা দেশে দৈনিক চাহিদা রয়েছে তিন হাজার ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের।

চাহিদা মেটানোর জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র থেকে অনুসন্ধান ও উত্তোলনের চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার। স্থল, অগভীর ও গভীর সমুদ্রে দেশি-বিদেশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অনুসন্ধান চালাচ্ছে। পাশাপাশি বিদেশ থেকে গ্যাস আমদানির লক্ষ্যে একাধিক এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের কাজও চলছে।

আজকের বাজার:এনএল/এলকে ১৫ জানুয়ারি ২০১৮