মাথার যন্ত্রণায় ঘরোয়া চিকিৎসা

মাথার যন্ত্রণাকে একেবারে সমূলে উৎখাত করবে এমন ওষুধ না থাকলেও এমন কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা আছে যা দিয়ে মাথার যন্ত্রণাকে নিমেষে কাবু করে ফেলা সম্ভব। যারা প্রায়শই মাথার যন্ত্রণায় ভুগে থাকেন তাদের জন্য এই উপাদানগুলো বেশ কাজে লাগতে পারে। এই উপাদানগুলো মাথার যন্ত্রণা কমানোর পাশপাশি আপনার টাকাও বাঁচাবে।

প্রসঙ্গত, নানা করণে মাথায় যন্ত্রণা হতে পারে। আর সেই কারণগুলির পেছনে যেমন আমাদের জীবনযাত্রা দায়ী থাকে, তেমনি নানা রোগের ভূমিকাকেও অস্বীকার করা যায় না। তবে আজকাল স্ট্রেস একটা বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মাথা ব্যথার ক্ষেত্রে। তাই তো আরও বেশি করে এইসব ঘরোয়া ওষুধগুলিকে সঙ্গে রাখতে হবে। কেন?

পরিসংখ্যান বলছে যত দিন যাচ্ছে স্ট্রেস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আগে থেকেই সাবধান হওয়াটা জরুরি।

১. দারুচিনি

প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসা শাস্ত্র আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা এই মশলাটিকে ‘মিরাকেল স্পাইস’ নামে ডেকে থাকেন। দারুচিনিকে কেন এমন নাম দেওয়া হয়েছে জানা আছে? আসলে দেখতে ছোট্ট হলেও আমাদের শরীরকে চাঙ্গা রাখতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, মাথার যন্ত্রণা কমাতেও দারুচিনি দারুন কাজে আসে। এক্ষেত্রে অল্প পরিমাণ দারুচিনি পাউডার নিয়ে পরিমাণ মতো পানিতে মিশিয়ে একটা পেস্ট বানাতে হবে প্রথমে। তারপর সেই পেস্টটা কপালে কম করে ৩০ মিনিট লাগিয়ে রাখলেই দেখবেন মাথার যন্ত্রণা উবে যাবে।

২. অ্যালো ভেরা

এতে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং বেশ কিছু কার্যকরি এনজাইম, যা মাথার যন্ত্রণা এবং একাধিক স্কিনের সমস্যা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৩. ল্যাভেন্ডার

এতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-সেপটিক প্রপার্টিজ, যা যে কোনও ধরনের যন্ত্রণা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। পরিমাণ মতো গরম পানিতে কয়েকটি ল্যাভেন্ডার পাতা ফেলে ভাপ নিন। দেখবেন আনেক আরাম পাবেন।

৪. লবঙ্গ

এতে থাকা পেইন-রিলিভিং প্রপার্টিজ সারা শরীরের ঠাণ্ডা স্রোত বইয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে কপালে হওয়া প্রদাহকে একেবারে কমিয়ে দেয়। তাই তো এবার থেকে কপালে ঠিপ ঠিপ করলেই অল্প কয়েকটা লবঙ্গ বেটে একটা পরিষ্কার রুমালে রেখে বারে বারে গন্ধ নিতে থাকবেন। এমনটা কয়েক মিনিট করলেই দেখবেন কষ্ট কমে যাবে।

৫. তুলসি

কয়েকটি তুলসি পাতা নিয়ে হাতে ঘেষে কপালে লাগিয়ে ফেলুন। আরাম পাবেন। কারণ এই পাতাটির ভেতরে ঠাসা রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা এই ধরনের কষ্ট কমাতে দারুন কাজে আসে।

৬. সেগে পাতা

এই পাতাটি মাথার ব্যথা তো কমায়ই, সেই সঙ্গে আরও নানা ধরনের সমস্যার প্রকোপ কমাতে কাজে লাগে।

৭. পার্সলে

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি মাথার যন্ত্রণা কমাতে এটি দারুন কাজে আসে। তাই এবার থেকে মাথার যন্ত্রণা হলেই অল্প করে পার্সলে শাকের পাতা খেয়ে নেবেন। নিমেষে কমে যাবে ব্যথা।

৮. থাইম পাতা

ল্যাভেন্ডার পাতার মতনই এতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপার্টিজ যা প্রদাহ কমায়। তাই মাথায় যন্ত্রণা হলেই থাইম পাতার রস খান। ফল পাবেন হাতে-নাতে।

৯. মিন্ট পাতা

প্রতিদিন নিয়ম করে মিন্ট পাতা দিয়ে বানানো চা খেলে শুধু মাথায় যন্ত্রণা নয়, সেই সঙ্গে পেটের ব্যথা এবং মাথা ঘোরার মতো সমস্যাও কমে।

১০. আদা

মাথা যন্ত্রণা কমাতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ আদার ভেতরে  থাকা অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান কপালের ব্লাড ভেসেলের প্রদাহ কমানোর মধ্যে দিয়ে নিমেষে মাথা যান্ত্রণা কমাতে দারুন উপযোগি ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো এবার থেকে কপালে আগুন জ্বললেই এক কাপ আদা চা বানিয়ে ঝটপট খেয়ে ফেলবেন। তাহলেই দেখবেন কেল্লাফতে!

১১. লেবু

মাথা যন্ত্রণা কমাতে এটি দারুন কাজে আসে। এমনকি যে কোনও ধরনের চুলকানি কমাতেও এই ঘরোয়া ওষুধটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।

আরএম/