মামলা জটিলতায় স্কুল ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ, ঝুঁকিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

১৯৭০ সালে বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে পটুয়াখালী শহরের অবস্থিত লতিফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ত্রাণ বিতরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৫ সালে তার নির্দেশে স্কুলটি জাতীয়করণ করা হয়। সেই স্কুলটির জরাজীর্ণ একটি ভবনে জোড়াতালি দিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।

গত বছর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্কুলে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এতে কিছুটা আশার সঞ্চার হয় স্কুল কর্তৃপক্ষও শিক্ষকদের। কিন্তু সেই আশায় গুড়েবালি। বর্তমানে মামলার জটিলতার কারণে নির্মাণ কাজ বন্ধ ভবনটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এক কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে একটি চারতলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করার কথা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের। স্কুলের জমি নিয়ে স্থানীয়দের সাথে দ্বন্দ্ব তৈরি হলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাশিদা বেগম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর জমি বুঝে পাওয়ার জন্য আবদেন করলে ইউএনও ভূমি কর্মকর্তাকে জমি বুঝিয়ে দেয়ার জন্য বলেন। ভূমি কর্মকর্তা সরেজমিনে পরিদর্শন করে ২০২০ সালের ৪ মার্চ স্কুল কর্তৃপক্ষকে জমি বুঝিয়ে দেন। বুঝিয়ে দেয়ার সাত দিন পর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কাজ শুরুর এক মাস যেতে না যেতেই স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মতলব বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন, মামলার প্রেক্ষিতে আদালত চলমান নির্মাণ কাজ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। মামলা জটিলতায় স্কুল ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ, ঝুঁকিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

প্রাথমিক বিদ্যালরে প্রধান শিক্ষক রাশেদা বেগম বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ থেকে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করা হয়। ভবনের ভিম বসাতে মাটি কেটে বেইজ ঢালাই দেয়ার পর আদালতের নির্দেশে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে ঠিকাদার। এরপর দীর্ঘ ছয় মাস এভাবেই পরে আছে।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দ্বিতীয় তলা ভবনের পাশে গর্ত থাকায় ভবনটি হুমকির মুখে রয়েছে। বিদ্যালয় খোলার কারণে শিক্ষার্থীরা যে কোন সময় দুর্ঘটনায় মুখোমুখি হতে পারে। এছাড়াও ৪১৮ জন শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র চারটি শ্রেণি কক্ষ তাও ঝুঁকিপূর্ণ সব মিলিয়ে বিপদের মধ্যে আছি।’ ভবন নির্মাণ কাজের ঠিকাদার রানা মিয়া বলেন, ‘একটি স্কুলের উন্নয়নমূলক কাজ করতে ছিলাম তার মধ্যে কাজে বাধা দেয়। দীর্ঘদিন এই কাজ বন্ধ থাকায় ভবন নির্মাণের জন্য রাখা রডগুলো মরিচা ধরেছ। মালামালগুলো পড়ে থাকায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’

প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছায়েদুজ্জামান বলেন, ‘বিদ্যালয়টির পুরাতন ভবনের কোল ঘেঁষে নির্মাণের কাজ শুরু হলে মামলা জটিলতায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। যার কারণে পুরাতন ভবনের দুটি শ্রেণিকক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এই ঝুঁকি থেকে রেহাই পেতে অবিলম্বে মামলা নিষ্পত্তি পূর্বক কাজ চলমান হওয়া দরকার।’ খবর-ইউএনবি

আজকের বাজার/আখনূর রহমান