গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোঁরায় হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ জেএমবির ভারতীয় শাখার আমির। সে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের খাগড়াগড়ের বোমা বিস্ফোরণ মামলার মোস্ট ওয়ান্টেড আসামি। কিছুদিন আগে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ মাহফুজকে ধরতে ১০ লাখ ভারতীয় রুপি পুরস্কার ঘোষণা করে।
শনিবার (৮ জুলাই) চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থেকে নব্য জেএমবির উত্তরাঞ্চলীয় কমান্ডার ও হলি আর্টিজান হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী সোহেল মাহফুজসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরবর্তীতে বিকালে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অwতরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি আরো জানিয়েছেন, বর্তমানে গুলশান হলি আর্টিজান হামলার তদন্ত শেষ করতে আরো দুইজনকে গ্রেফতার করা বাকি রয়েছে।
মনিরুল ইসলাম বলেছেন, মাহফুজ জেএমবির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য এবং নব্য জেএমবির মজলিসে সূরা সদস্য। ২০০৪ সালে রাজশাহীর বাগমারাতে বাংলাভাইয়ের নেতৃত্বে কথিত সর্বহারা বিরোধী বেশ কয়েকটি অপারেশন চালানো হয়। সে সময় ককটেলের আঘাতে তার একটি হাত উড়ে যায়। তারপর থেকে সে ভারতে আশ্রয় নেয় এবং সেখানে জেএমবি গঠন করে। ২০১৪ সালে খাগড়াগড়ে হামলার পর মাহফুজ সে দেশ থেকে পালিয়ে আবার বাংলাদেশে আসে। আবারো বিভিন্ন সময় আত্মগোপনে ভারত চলে যায় মাহফুজ। সর্বশেষ ওই দেশের পুলিশের পুরস্কার ঘোষণার পর সে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
তিনি জানিয়েছেন, নব্য জেএমবি গঠনের সময় তার বিচক্ষণতা ও জেএমবির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হিসেবে তাকে মজলিসে সূরা সদস্যের পদ দেওয়া হয়। যেহেতু তার একটি হাত নেই, তাকে মার্ক করা সহজ হবে, সেহেতু সে বেশি চলাফেরা করত না। নব্য জেএমবির নেতারা তার কাছে গিয়ে দেখা করে আসত। হলি আর্টিজান হামলার পরিকল্পনা প্রণয়নে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। গুলশান হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র-বিস্ফোরকগুলো ছোট মিজান বা অন্য কেউ বহন করেছিল, কিন্তু এগুলো আনা হয়েছে মাহফুজের পরিচালনায়।
ভারতীয় পুলিশ মাহফুজের সাথে কথা বলতে আগ্রহ দেখিয়েছে কিনা জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেছেন, ভারত বিভিন্ন সময় আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে মাহফুজের খোঁজ চেয়েছে। এখন হয়তো তারা অবশ্যই কথা বলতে চাইবে। যদি তারা চায় তাহলে আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেওয়া হবে।
সিটি প্রধান আরো বলেছেন, হলি আর্টিজানের মামলা তদন্তে আমাদের যে কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে সেসব অস্পষ্টতা কেটে যাবে। তাকে গ্রেফতারে ওই মামলার তদন্ত আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল। গুলশান হামলার চার্জশিট দিতে আমরা পাঁচজনকে খুঁজছিলাম। এদের মধ্যে তিনজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মাহফুজকে গ্রেফতারের পর গুরুত্বপূর্ণ আরো দুইজন বাকি রয়েছে।
আজকের বাজার : সালি / ৮ জুলাই ২০১৭