মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’র বিতর্কে যোগ দিলেন মিস আয়ারল্যান্ড

২০১৪ সালে মিস আয়ারল্যান্ড হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিলেন বাংলাদেশের মেয়ে মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি। এরপর গত বছরই মিস আর্থ প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিনি। আগের দুই খেতাবের পর আরও একটি খেতাব প্রিয়তির নামের সঙ্গে জুড়েছে। ‘মিস আর্থ ইন্টারন্যাশনাল-২০১৬’। শুধু তাই নয়, যোগ্যতার সফলতা স্বরূপ বিশ্ববিখ্যাত চিত্রশিল্পী জিম ফিটজপ্যাটরিকের এর তুলিতে ক্যানভাসে ফ্রেমবন্দি হয়েছিলেন এবং তা বিক্রি হয় আড়াই লাখ ইউরোতে, অর্থাৎ ২ লাখ ৬৯ হাজার মার্কির ডলার প্রায়।

প্রতিটি জায়গায় নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দেওয়া প্রিয়তি প্রায় সময় তিনি তার ব্যাক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লেখালেখি করে থাকেন। এতে সমসাময়িক বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে চেষ্টা করেন তিনি।

এ বছর শুরু হওয়া বহুল আলোচিত ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৭’ কে ঘিরে বিতর্ক থামছেই না। এ বিতর্কে যোগ দিলেন প্রিয়তি। প্রিয়তি তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘কোন সুন্দরী প্রতিযোগিতায় মেয়েদের ৩৬-২৪-৩৬ হতে হবে এমন কোন বাঁধা ধরা নিয়ম নেই। একজন মেয়ে/ মহিলা যখন নিজের শরীর বা স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থাকেন তখন স্বাভাবিকভাবেই তার খাওয়া-দাওয়া ঠিক রাখেন ও ব্যায়াম ও করেন। যা করলে অটোমেটিক ভাবেই শরীর থেকে চর্বি কমে, শরীরের একটা গঠন দেয় আর ব্যায়াম শরীরের energy and strength বাড়ায় এবং শরীর অটোমেটিক toned হয়ে যায়। এইটি নিজের প্রতি এক ধরনের সম্মান , সুস্থতাই সুন্দর বা সৌন্দর্য । না খেয়ে শুকালে ঐ শরীর কখনই toned হবে না এবং কাজ করার শক্তি ও মনোবল থাকে না।

আরেকটা বিষয়, আমরা যদি হলিউড এর এঞ্জেলিনা জুলি, নিকোল কিডম্যান , কেইট উন্সলেট পুরো শরীর মুভিতে দেখতে পারি , পপ স্টারদের দেখতে পারি স্টেজ কাপাচ্ছেন আবেদনময়ি শরীর, নাচ আর অল্প কাপড় দিয়ে যেমন রিহানা , জেনিফার লোফেজ , ম্যাডনা , ক্রিস্তিয়ানা প্রমুখ । আর সাথে বলিউড তো আছেই, সবাইকে টু- পিস কাপড়ে পুরো শরীর দেখছেন এবং তারাই আপনাদের প্রিয় নায়িকা , প্রিয় সিঙ্গার । তাদের কে কি শুধু উনাদের ট্যালেন্ট দিয়ে যাচাই করেন, শরীর কি যুক্ত করেন না ? ঐ সময় যদি নারী অবমাননা না হয় তাহলে শুধু সুন্দরী প্রতিযোগিতায় শুধু নারী দের অবমাননা কেন হয় , একটু দয়া করে বলবেন । যদি অবমাননা ই হয় তাহলে এঞ্জেলিনা থেকে ক্যাটরিনা পর্যন্ত বোরখা পরে অভিনয় করা উচিত, আমাদের entertain দেয়া উচিত।

যারা অবমাননা বলে কথা বলছেন, তারা কি জানেন, একজন প্রতিযোগী ঐ স্টেজ থেকে মুকুট/ জয়ী হওয়া ছাড়া ও আর সাথে কি নিয়ে আসেন? আপনারা কি ঐ স্টেজে হেঁটে দেখেছেন (কাপড় ছাড়া নয়, কাপড় সহ ই বলছি) ??

যারা অসৎ তারা ববাবর ই অসৎ থাকবে, একটা না হলে আরেকটা অসৎ উপায় খুঁজবে, অবলম্বন করবে কিন্তু অসৎ এর সাথেও শক্ত আরেকটি টার্ম আছে তাহলো সৎ থাকা , সৎ চিন্তা করা।
বাহ্যিক সৌন্দর্য দিয়ে সুন্দরী হওয়া বা প্রতিযোগিতায় জয়ী হওয়া বহু বছর আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাহলে মিস নাইজেরিয়া ২০০১ সালে মিস ওয়ার্ল্ড হতেন না ।
আপনার জানতে হবে, বহিঃবিশ্ব তে মডেলিং ওয়ার্ল্ড আর সুন্দরী প্রতিযোগিতা দুইটা আলাদা পৃথিবী। সুন্দরী প্রতিযোগিতা গুলো বেশীরভাগই নারী দ্বারা পরিচালিত , যেখানে হইত মডেলিং জগত একটু উলটো । তাদের বিচার ভঙ্গি ও আলাদা ।

এখন কোন মেয়ে যদি তার শারীরিক গঠন নিয়ে আত্মবিশ্বাসী না থাকে তখনই প্লাস্টিক সার্জারি , ব্রেসট ইমপ্ল্যান্ট ইত্যাদি ইত্যাদি করে থাকে , সেইটা সম্পূর্ণ তার নিজের ব্যাপার কিন্তু কোন প্যাজেনট তা করতে বলেনা বা উৎসাহ দেয় না বরং ন্যাচারাল সৌন্দর্য কে প্রাধান্য বেশী দেয়।

আপনাদের জানতে হবে, জানা দরকার। বিশেষ করে যারা লিখেন বা যাদের লেখা ছাপা হয়। কেননা , ঐ একটি লেখা আরও কয়েকজন মানুষকে প্রভাব ফেলে। প্রভাব ফেলার আগে জানা উচিত আমি যা জানি তা সঠিক জানছি কিনা।’ৎ

আজকের বাজার: আরআর/ ০৭ অক্টোবর ২০১৭